ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ


১৩ নভেম্বর ২০১৯ ১২:২৩

নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সাহিত্যের এই কিংবদন্তি।

জন্মবার্ষিকীকে ঘিরে প্রতিবারের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে নানা আয়োজন। হুমায়ূন স্মৃতিবিজড়িত নুহাশ পল্লীতে আজ হুমায়ূন ভক্তরা প্রিয় লেখকের কবর জিয়ারত করবেন। পাশাপাশি রয়েছে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। হুমায়ূন ভক্তদের সংগঠন হিমু পরিবহনের আয়োজনে রয়েছে পদযাত্রা, হুমায়ূনের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা।

জন্মদিন উপলক্ষে গত সোমবার নেত্রকোনায় হyমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে হুমায়ূন স্মরণে অনুষ্ঠান হয়। এ সময় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হুমায়ূন আহমেদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তার ছোটভাই কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল, স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ অন্য অতিথিরা। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন কুদ্দুছ বয়াতি, এসআই টুটুল, সেলিম চৌধুরী প্রমুখ।

জন্মদিন উপলক্ষে আজ ঢাকার চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ ‘হুমায়ূন মেলা’। বেলা ১১-০৫ মিনিটে উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত থাকবেন হুমায়ূন আহমেদ পরিবারের সদস্য, নাট্যব্যক্তিত্ব, কবি-সাহিত্যিক, চ্যানেল আইর পরিচালকবৃন্দ ও বিশিষ্ট সাংবাদিকরা।

মেলায় থাকবে হুমায়ূন আহমেদের বই, চলচ্চিত্র, নাটকের ডিভিডির স্টল। মেলায় পরিবেশিত হবে হুমায়ূন আহমেদের লেখা গান। স্মৃতিচারণ করবেন মেলায় আগত বিশিষ্টজনরা। বিকেল ২টা পর্যন্ত মেলা সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল আই ও রেডিও ভূমি।

১৯৭২ সালে প্রকাশিত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। তার সৃষ্টি হিমু, মিসির আলী, বাকের ভাই চরিত্রগুলো পেয়েছে ‘অমরত্ব’। ১৯৮০-৯০ এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ধারাবাহিক এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রচনা করেন তিনি। ১৯৮৩ সালে তার প্রথম টিভি কাহিনীচিত্র ‘প্রথম প্রহর’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার শুরু হলে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

তার টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘অয়োময়’, ‘আজ রবিবার’, ‘নিমফুল’, ‘তারা তিনজন’, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন’, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘সবুজ সাথী’, ‘উড়ে যায় বকপঙ্খী’, ‘এই মেঘ এই রৌদ্র’ প্রভৃতি৷ এ ছাড়া ‘খেলা’, ‘অচিন বৃক্ষ’, ‘খাদক’, ‘একি কাণ্ড’, ‘একদিন হঠাৎ’, ‘অন্যভুবন’-এর মতো নাটকগুলোর সংলাপ এখনো অনেকের মুখেই শোনা যায়৷ হুমায়ূন আহমেদের চিত্রনাট্য ও পরিচালনার ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। গীতিকার হিসেবেও তিনি নন্দিত হয়েছেন। তার লেখা গান অসংখ্য মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ লাভ করেন তিনি৷ এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হyমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কারসহ (১৯৮৮) অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক৷ জাপান টেলিভিশন ‘এনএইচকে’ হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে নির্মাণ করে ১৫ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’৷

২০১২ সালের ১৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন নন্দিত এই কথাসাহিত্যিক।