বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত: ফখরুল

বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, নির্বাচনের মাধ্যমেই আমরা সরকার পরিবর্তন চাই এবং সেই নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরী করতে হবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাকে অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরাও প্রশ্ন করেন, আমরা নির্বাচনে যাব কি না? আমরা বলেছি, নির্বাচনে তো আমাদের যেতেই হবে, কারণ আমরা তো রাজনৈতিক দল, নির্বাচনের মাধ্যমেই সরকার পরিবর্তন চাই, করতেও হবে তাই। কিন্তু কোন নির্বাচন? যে নির্বাচনে কথা বলার সুযোগ থাকবে না, ক্যাম্পেইন করার সুযোগ থাকবে না। জনগণ ভোট দিতে পারবে না, সেটা কি নির্বাচন হবে?
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে একটা প্রজ্ঞাপন দেখলাম, সেখানে পুলিশকে বলা হয়েছে, প্রিজাইডিং অফিসার, এসিস্ট্যান্ট প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারদের নাম তালিকা করে পাঠাতে। নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজন নাই, পুলিশ তালিকা করছে। কি চমৎকার, যেসব জায়গায় বিরোধী দলের শক্তিশালী নেতা আছে তাদের তালিকা করে জেলে ভরা হচ্ছে। এভাবে নির্বাচন হবে না। পরিস্কার কথা, খালেদা জিয়াকে সবার আগে মুক্তি দিন, নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরী করুন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন, সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করুন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার তৈরী করুন। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে মোতায়েন করতে হবে। সকল দলকে সমান সুযোগ দিতে হবে। আর ইভিএম চলবে না।
তিনি আরও বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার গায়েবী মামলায় ২ লাখ তেত্রিশ হাজার আসামি করা হয়েছে। এসব কখন করে? যখন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। যখন দেখে ২০ দলীয় জোট যদি নির্বাচনে যায় তাহলে তাদের কোনো অস্তিত্বই থাকবে না।
উন্নয়নের মেগা প্রজেক্টের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এমন উন্নয়নের মেগা প্রজেক্ট যে পদ্মা সেতুর কয়েকটি পিলার করেছে, বাকীগুলোর তলদেশ খুঁজে পাচ্ছে না। নদীকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে যে, শরীয়তপুরের নড়িয়া ভেঙে নদীতে চলে যাচ্ছে। ভারত থেকে তেল নিয়ে আসার জন্য পাইপলাইন বসানো হচ্ছে, নতুন নতুন পোর্ট তৈরী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সে পোর্টের দরকার আছে কি নেই তাও চিন্তা করা হচ্ছে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সবকিছুর উদ্দেশ্য একটাই ব্যাপক দুর্নীতি। জাতীয় ঐক্যর ডাক খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগেই দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, দুঃশাসনকে সরাতে হলে সমস্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শুধু ২০ দল নয়, আসুন সমস্ত রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, ধর্ম, বর্ণ সবাই একত্রিত হয়ে এই সরকারকে বাধ্য করি একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে, যে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এর মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ডেমোক্রেটিক লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমানসহ ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
একেএ