২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় ১০ অক্টোবর

আগামী ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দুই মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার মামলা দুটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ দিন ধার্য করেন।
সোমবার দুপুর সোয়া ১২টায় এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। আজ আইনগত বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত যুক্তি উপস্থাপন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাহজাহান। এরপরই এ মামলায় রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।
যুক্তি উপস্থাপনের শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান প্রসিকিউটর জানান, ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড পরিকল্পনার ১০টি ঘটনাস্থল রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছে। শোনা সাক্ষী গ্রহণ করার বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি সিদ্ধান্তও দাখিল করেন। এ ঘটনায় ১৫টি গ্রেনেড ব্যবহারবিষয়ক যুক্তিগুলো রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করেছে বলে জানান। একই সঙ্গে জামিনে থাকা ৮ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানান তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষের জামিন বাতিল চাওয়া ৮ আসামি হলেন- বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।
দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আসামি আবুল কালাম আজাদ, শেখ আব্দুস সালাম, মাওলানা ইয়াহিয়া, আব্দুল হান্নান সাব্বির ও শেখ ফরিদের পক্ষে যুক্তি খণ্ডন শুরু করেন আইনজীবী মাঈনুদ্দিন মিয়া। তিনি মামলাটিতে দাখিলকৃত সর্ম্পূণ তদন্ত প্রতিবেদন দায়রা আদালত এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে গ্রহণ করেছেন উল্লেখ করে এ সংক্রান্তে উচ্চ আদালতের একটি সিদ্ধান্ত দাখিল করেন।
এ ছাড়া জজ মিয়া, আবুল হাসান রানাসহ তিনজনের স্বীকারোক্তি বিবেচনার বিষয়ে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়েও অবহিত করেন। তিনি বিচারকালীন সব আসামিকে নির্দোষ ভাবতে হবে মর্মে উচ্চ আদালতের একটি সিদ্ধান্তও আদালতে দাখিল করেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংস ও বর্বরোচিত ওই হামলায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী, দলের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। এঘটনায় আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী। সে সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশসহ (হুজি) তিনটি জঙ্গি সংগঠন হামলা চালায় বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় দুটি মামলা দায়ের হয়। এর একটি হত্যা মামলা ও অপরটি বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলা। হত্যা মামলায় মোট আসামি ৫২ জন ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় ৪১ জন। সর্বমোট ৫২ আসামির মধ্যে ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ৮ জন জামিনে ও ২৫ জন কারাগারে ছিলেন।
তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাসহ ভিন্ন মামলায় তিন আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় ১৮ আসামি পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কাজ শুরু হয়। একই সঙ্গে বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।
আরকেএইচ