ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


একসঙ্গে ছাত্রদল-ছাত্রলীগ


১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৫

ছাত্রলীগের সা. সম্পাদক ও ছাত্রদলের সভাপতির আলিঙ্গন 
চির প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ছাত্র সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের আলিঙ্গন করতে দেখা গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। 
 
রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রেজিস্ট্রার ভবনে আসেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। সেখানেই দেখা হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসানের। এ সময় রাজিব আহসানের সঙ্গে আলিঙ্গন  করেন গোলাম রাব্বানী।
 
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে পরিবেশ পরিষদের বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হবেন ছাত্রদলের নেতারা এমন খবর আগেই জানা ছিল সবার। ছাত্রদলের নেতারা ক্যাম্পাসে আসছেন এ কারণে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয় কি না তা নিয়েও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী ও গণমাধ্যম কর্মীদের কৌতূহল ছিল অনেক।
 
কিন্তু সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দেখা গেল ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাড়িতে করে সভাস্থল রেজিস্ট্রার ভবনে পৌঁছালেন। তাদের সঙ্গে এসেছেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম। 
 
বেলা পৌঁনে ১২টায় বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। বৈঠক শেষ হয় বিকেল ৪টায়।
 
যখন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বেরোচ্ছেন তখন দেখা গেল বাইরে ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী। আর ছাত্রদলের মাত্র ওই দুই জন। ছাত্রদলের ওই দুই নেতাকে তখন নিরাপদে বের করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী। ছাত্রদলের দুই নেতাকে ঘিরে ছাত্রলীগের নেতারা। ছাত্রদলের দুই নেতার মধ্যে ছিল আতঙ্ক। বারবার তারা পেছনের দিকে দেখছিলেন।
 
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজোয়ানুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং বিশ্ববিদ্যালয়রে নেতারা ঘিরে রেখেই ছাত্রদলের দুই নেতাকে রেজিস্ট্রার ভবন থেকে বের করে আনলেন। সেখানে ওই দুই নেতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি অপেক্ষা করছিল। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাত্রদলের নেতাদের বিদায় দিলেন সেখানে। 
 
বিদায়ী আলাপের মধ্যেই ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব আহসানকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী। এরপরই গাড়িতে উঠে বসলেন ছাত্রদলের নেতারা। বিদায় নেন ক্যাম্পাস থেকে।
 
সহাবস্থান বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, পকেটে পেট্রোল বোমা না রাখলে সহাবস্থানে ছাত্রলীগের আপত্তি নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনকে আমরা রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি।
 
তিনি আরো বলেন, ঢাবির হলগুলোতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আছে ৩০ শতাংশ। বাকিগুলো সাধারণ শিক্ষার্থী ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী।  ক্যাম্পাসে সহাবস্থানে কোনো আপত্তি নেই। তবে তারা পকেটে পেট্রোল বোমা রাখবে না আমাকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে। 
 
এসময় তিনি ২০১৪ সালে ছাত্রদলের এক নেতাকে হাতেনাতে পেট্রোল বোমাসহ ধরে ডিএমপির কাছ থেকে পুরস্কার নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
 
প্রসাশনের সভা শেষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে আমরা রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি। আমরা ক্যাম্পাসে সহাবস্থানের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি।
 
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করলে ডাকসু নির্বাচন সহায়ক হবে এবং ছাত্রদল অংশ নেবে বলেও জানান তিনি। 
 
ক্যাম্পাসে আজ অনিরাপদবোধ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আজ তো প্রশাসন আমাদের ডেকে নিয়ে এসেছে। স্বাভাবিক সময়েও আমরা এমনটি চাই।
 
একেএ