ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


মামাবাড়ির আবদার করলে তো চলবে না: কা‌দের


১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:২৩

 আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কা‌দের
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, এর বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই মন্তব্য ক‌রে আওয়ামী লী‌গের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কা‌দের ব‌লেছেন, নির্বাচনের আর বেশি দিন বাকি নেই, এখন মামাবাড়ির আবদার করলে তো চলবে না।   
 
রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইনস্টিটউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স (আইডিইবি) কাউন্সিল হলে সংগঠনটির ৪১তম কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। 
 
‌তি‌নি ব‌লেন, সংসদের শেষ অধিবেশন অক্টোবর মাসের ২০ তারিখের আগেই শেষ হয়ে যাবে। এরপর আর সংসদ বসবে না নির্বাচন পর্যন্ত। এ সংসদ সদস্যদের কোনো ক্ষমতা ও কার্যকরিতা থাকবে না। কাজেই এটা ভেঙ্গে দেয়া, গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো রেখে এবং অকার্যকরের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়, আমি বুঝতে পারি না।
 
 
জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন সেনা মোতায়েন হবে না, এটা আমরা বলবো না। প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েন হবে। যদি সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী সেনা মোতায়েন করার দরকার হয়। সেই অবস্থায় নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করলে, সরকার প্রয়োজন এবং বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে কিভাবে মোতায়েন হবে সেই সিদ্ধান্ত নিবে।  
 
সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় সরকার গঠন, বিচারিক ক্ষমতায় দিয়ে সেনা মোতায়েন, নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠনে যুক্তফ্রন্টের দাবি অপ্রাসঙ্গিক, অবান্তর, অপ্রয়োজন ও অসাংবিধানিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় সরকার করার তো প্রয়োজন নেই। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই নির্বাচন হবে আমাদের দেশে। 
 
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বিকল্প কি? আমাদের বিকল্প হচ্ছে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। যারা দুঃশাসনে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত অত্যাচার, নির্যাতন করেছে। সেই নির্যাতন, অন্ধকারে কি কেউ ফিরে যেতে চান? আমরা মনেকরি না আমাদের সবকিছু শুদ্ধ, আমাদের ভুলত্রুটিও আছে কিন্তু ভুল ত্রুটি সংশোধনের সৎসাহস শেখ হাসিনার রয়েছে। দলের মধ্যে কেউ অন্যায় করলে তাকে আমরা শাস্তি দেই। কিন্তু আমাদের বিকল্প যারা ভাবেন, তারাতো নিজেদের লোকদের শাসনই করেন না। 
 
কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠনের সময় এখন নেই। এখানে তো বিএনপিরও প্রতিনিধি রয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই রাষ্ট্রপতি এ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
 
যুক্তফ্রন্টের পাঁচ দফা বিএনপির দাবির সঙ্গে মিলে গেছে কিনা সাংবাদিকদের এমন লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা মিলে গেলো কিনা, তা দেখা আমাদের কোনো বিষয় না। বিএনপি কার সঙ্গে যাবে, কিভাবে যাবে তা আমাদের বিষয় না। আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি যুক্তফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, বিএনপির প্রধান মিত্র জামাতে ইসলাম থাকলে তারা বিএনপির সঙ্গে যাবে না। এখানে তো আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। তবে নতুন নতুন জোট হলে স্বাগত, শত ফুল ফুটুক, অসুবিধা নাই। নতুন নতুন জোট হোক নির্বাচন করুক।
 
বিএনপি মহাসচিবের যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাহস থাকলে জনগণের কাছে নালিশ করুন। বিদেশে গিয়ে নালিশ করে দেশকে কেন খাটো করছেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণ, বাস্তবে দেখা গেলো এমন কোনো আমন্ত্রণ নেই। কি রকম তারা প্রতারণা করে, রাজনীতিতে ছদ্মবেশী প্রতারণা পার্টির নাম বিএনপি। বিএনপি এখন বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশ কান্নাকাটি পার্টি হয়ে গেছে। 
 
বিএনপি নির্বাচনে না আসলে যুক্তফ্রন্টই বিএনপির বিকল্প কিনা সাংবাদিকদের এমন লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা আমরা জানি না। তবে আমরা জানি বিএনপি না এলেও এবার প্রতিদ্বন্দ্বির অভাব নাই, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফাঁদ তৈরির কোনো সুযোগ নেই। সবাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই এবার নির্বাচিত হবে।
 
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে নির্বাচনের দাবির প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আমরা কি, যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, আমরা কি সুদান, কঙ্গো, ইরাক, আমরা কি জিম্বাবুয়ে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন পরিচালিত হবে। এখানে কোনো ব্যতয় করার সুযোগ নেই। শেখ হাসিনা সরকারই তত্ত্বাবধান করবে এবং নির্বাচন কমিশনই এ নির্বাচন পরিচালনা করবে। 
 
ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল গণভবনে আমাদের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম বৈঠক হয়েছিলো। বৈঠকের এ পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছেন, সভা সমাবেশ করার ব্যাপারে এখন থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে এ কথা পুলিশ কমিশনারকে জানিয়ে দিতে তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আজকে আমি পুলিশ কমিশনারকে জানিয়ে দিয়েছি। রাস্তাঘাট বন্ধ করে সমাবেশ না করে, পল্টনে রাস্তাবন্ধ করে সমাবেশ ও প্রেসক্লাবের সমানে সমাবেশ এসবের প্রয়োজন নেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উন্মুক্ত, যারাই অনুমতি চাইবে পুলিশ অনুমতি দিবে। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো বাধা ছিলো না, পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক সময় অনেকই অনুমতি দেয় না। 
 
প্রধানমন্ত্রী পরিস্কার ভাষায় বলে দিয়েছেন নিবন্ধিত যেসব দল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি চাইবেন কোনো সমস্যা হবে না। সবাই অনুমতি পাবে। 
 
এ কাউন্সিল অধিবেশনে আইডিইবির সভাপতি এ কে এম হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান।
 
একেএ