ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হলে ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হবে


১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:৩০

বিশ্বে বাংলাদেশেই প্রথম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ হলে আইসিটি অ্যাক্ট এর ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হবে। তবে এই ধারায় দায়েরকৃত পূর্বের মামলাগুলো যথানিয়মে চলবে। নতুন এ আইন ৩২ ধারা গুপ্তচরবৃত্তি বাক স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়, ডিজিটাল অপরাধ দমনের জন্য।

শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদের আদলে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

বিতর্ক অনুষ্ঠানটি রাজধানীর তেঁজগাওস্থ এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়। এবারের এই জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।

আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে দায়িত্বশীল করতে আইনী নিয়ন্ত্রন বিষয়ক এ প্রতিযোগিতায় নর্থ সাউথ বিশ্ব বিদ্যালয়কে পরাজিত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিজয়ী হয়।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হবার পর দেশে বিদ্যমান আরো কিছু আইনের সংশোধন প্রয়োজন হতে পারে। তথ্য অধিকার আইনে বর্নিত নাগরিক অধিকার সমুন্নত রেখেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করা হচ্ছে।

নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনের সময় যারা গুজব ছড়িয়েছেন, তাদের সবাইকে প্রযুক্তির মাধ্যমে চিহ্ণিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। গুজব ছড়ানোকারীদের আইপি ঠিকানা ও মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি করতে সক্ষম হওয়ায় তিনি আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।

দুর্নীতি বিরোধী সংবাদ পরিবেশনের জন্য এ আইন অন্তরায় হবে না, তবে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট লংঘন শাস্তি যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তিনি আরও বলেন ডিজিটাল অপরাধ কমাতে আইনী কাঠামোর পাশাপাশি ব্যাপক জনসচেতনতা প্রয়োজন। মোস্তাফা জব্বার বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের টার্গেট নয়; বরং ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণই মূল লক্ষ্য। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমেই ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

মৌলিক চেতনার পরিপন্থী না হয়ে মুক্ত সাংবাদিকতা বা মত প্রকাশকে সংকুচিত না করে। এক্ষেত্রে আইসিটি অ্যাক্ট এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর দুটি ধারা নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা নিস্পত্তি হওয়ার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দায়িত্বশীলতা বাড়ানোর জন্য যে আইন তৈরি হতে যাচ্ছে তা যেন নাগরিক অধিকারের পরিপন্থী না হয়।

তিনি বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে, চটকদার ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালানো কিংবা কাউকে হেয় করে কোন সংবাদ ছড়িয়ে দেওয়া এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিত্যদিনের ঘটনায় পরিনত হয়েছে।

ফলে বিশ্বাস-ভালবাসা, মূল্যবোধ, পারিবারিক বন্ধন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা তৈরি হচ্ছে। তাই এই যোগাযোগ মাধ্যমের বেআইনী ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়া উচিত ।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু রইস, ড. এস এম মোর্শেদ এবং সাংবাদিক মোহাম্মদ খান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

আরআইএস