ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রথমে বোরহান ধর্ষণ করে পরে আমি ও শেষে লালন


১৩ মে ২০১৯ ০৬:০৭

কিশোরগঞ্জে চলন্ত বাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছে মামলার প্রধান আসামি স্বর্ণলতা বাসের ড্রাইভার নূরুজ্জামান নুরু।

শনিবার (১১ মে) রাতে তাকে আদালতে হাজির করলে সে তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দিয়েছেন।

রবিবার (১২ মে) ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ড্রাইভার নূরুজ্জামান ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছে, তার খালাতো ভাই বোরহান পথের মধ্যে বাসটিতে ওঠে। দ্বিতীয় সিটে বসা ছিল তানিয়া। হেলপার লালন এ সময় টেনেহেঁচড়ে বাসের মাঝখানে নিয়ে যায় তানিয়াকে। কিছুক্ষণ পর হেলপার লালন বাস চালায়। আর ড্রাইভার পেছনের সিটে বসে সিগারেট খেতে থাকে। বোরহান মেয়েটিকে ধরে জোরপূর্বক বাসের মেঝেতে ফেলে ধর্ষণ করতে থাকে। এ সময় মেয়েটি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। ড্রাইভার বাসের সিটে বসে এ দৃশ্য দেখছিল। এরপর ড্রাইভার নুরু ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে গাড়িটি একটি কলাবাগানের সামনে থামানো হয়। সেখানে লালন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় তানিয়া লালনকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। পরে ওরা তিনজন মিলে বাস থেকে জোরে ধাক্কা দিলে তানিয়া নিচে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়ার সময় বাসের সঙ্গে মাথায় বাড়ি খায় মেয়েটি। পরে নিচে পড়েও মাথায় আঘাত পায় সে।’

ধর্ষণের পর তানিয়াকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার পর ধর্ষকরা নিজেরাই আবার ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রাও এগিয়ে আসে। কিন্তু ধর্ষকরা স্থানীয়দের জানিয়েছিল, এয়ারফোনে গান শুনতে শুনতে মেয়েটি বাস থেকে পড়ে গেছে, আমরাই হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। তাদের কথা বিশ্বাসও করেছিল স্থানীয়রা। পরে অচেতন অবস্থায় তানিয়াকে পিরিজপুর বাজারের সততা ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ফার্মেসি থেকে মেয়েটিকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার কথা বললে স্বর্ণলতা বাসের অপর স্টাফ আল আমিন ও রফিককে দিয়ে কটিয়াদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় তারা। এরপর তানিয়াকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার বর্ণনা দেয় ড্রাইভার ও হেলপার। হাসপাতালের আশপাশ থেকে রফিককে গ্রেফতার করলে পালিয়ে যায় আল আমিন।

প্রসঙ্গত, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুর রুটে চলাচলকারী স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে গত ৬ মে তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। বাজিতপুর উপজেলার গজারিয়ায় কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন ঢাকা থেকে কটিয়াদী ও বাজিতপুরের পিরিজপুর হয়ে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন তানিয়া। তিনি কটিয়াদী উপজেলার লোহাজুরি ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মো. গিয়াসউদ্দিনের মেয়ে। তানিয়া ঢাকার কল্যাণপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালে সেবিকা পদে কর্মরত ছিলেন। এ ঘটনায় বাসের চালক নূরুজ্জামান নুরু (৩৯) ও সহকারী লালন মিয়াসহ (৩২) মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নতুনসময়/আইকে