ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


কাউন্সিলর রাজিব ফের রিমান্ডে


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২১

রাতারাতি বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাওয়া বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিবের মানিলন্ডারিং আইনের একটি মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আজ সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মাদ মিল্লাত হোসেন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সিআইডি এ রিমান্ড আবেদন করে। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সিআইডির এসআই জায়েদ আরী জাহিদ এ মামলা করেন।

মামলায় বলা হয়, আসামি রাজিব চারটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে অর্জিত প্রায় ১৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে ২০১৫ সালের ১ জুন থেকে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত চাঁদাবাজি, গরুর হাটের টেন্ডারবাজি, অবৈধ মাদক ব্যবসা, প্রতারণা এবং অস্ত্রের মাধ্যমে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছেন। এসব কাজে তার সহযোগী ছিলেন মো. শাহ আলম হোসেন জীবন, কামাল, নুর মোহাম্মদ ও রুহুল আমিনসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন। অপরাধলব্ধ আয় দিয়ে বাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি ক্রয়, নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান চালু করাসহ প্রায় ১৮ কোটি ৪০ লাখ ২৭ হাজার ১৯২ টাকা স্থানান্তর করেছেন।

মামলায় বলা হয়, রাজিব ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে মোহাম্মদপুর বিআরটিএ বাস স্ট্যান্ড, বসিলা বাসস্ট্যান্ড, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ চৌরাস্তা থেকে সুইচ গেট পর্যন্ত সড়কের দুপাশের অবৈধ ফুটপাত, সরকারি জমির উপর অবৈধ দোকান, টেম্পু স্ট্যান্ড, অটোরিকশা স্ট্যান্ড, ইজিবাইক স্ট্যান্ড, ট্রাক স্ট্যান্ড, পিকআপ স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন। তাকে এ কাজে সহায়তা করতেন সহযোগী শাহ আলম। এ ছাড়া ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, নবীনগর, তুরাগ, একতা হাউজিং এলাকায় অটোরিকশা চলার জন্য রুহুল আমিনের সহযোগিতায় ১৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন।

মামলায় আরও বলা হয়, রাজিবে প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় নুর মোহম্মদ নামে অপর ব্যক্তি ঢাকা উদ্যান এলাকায় অনিষ্কণ্টক জমি জোর করে দখল ও কাউন্সিলর অফিসে ভুক্তভোগীদের ডেকে এনে ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে জমি বিক্রি করার জন্য বাধ্য করতেন। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর গত ৪ বছর ধরে তারেকুজ্জামান রাজিব বসিলা তিন রাস্তার মোড়, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় প্রতি বছর কুরবানির পশুর হাটের নিয়ন্ত্রণসহ প্রকাশ্য চাঁদাবাজিতে লিপ্ত ছিলেন। তা ছাড়া কাউন্সিলর পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নামিরা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জমি দখল ও বিক্রয় কার্যক্রম চালাতেন তিনি।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে তারেকুজ্জামান রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রসঙ্গত, রাজীব ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তিনি আবার ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। নিম্নবিত্ত পরিবারের রাজীবের বাবা রডের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। তার চাচা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই রাজীবের পরিবর্তন শুরু হয়।