ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


যে কারনে ইরানকে ভয় পায় যুক্তরাষ্ট্র


২১ মে ২০১৯ ২৩:৪০

পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পর চলতি মাসে ইরানও বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র বাকযুদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলে বিশ্ব মানচিত্র থেকে ইরানকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

দেশ দুটির মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ট্রাম্প এমন হুশিয়ারি দিলেন।

এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ইরান যদি যুদ্ধ করতে চায় তা হলে দেশটির আর কোনো অস্তিত্ত্ব থাকবে না। ইরানকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প আরও বলেন, আর কখনও যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দেবেন না।

এদিকে ইরান পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ শুরু করলে কিছুই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে না।

হুমকি পাল্টা হুমকিতে উত্তপ্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের কূটনীতি। যুদ্ধে না জড়ানোর কথা বললেও থেমে নেই দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের বাকযুদ্ধ। কড়া বাক্যে একে অপরকে ঘায়েল করতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান।

মার্কিনীদের সাথে ইরানের চলমান উত্তেজনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ শক্তিশালি এ দুই দেশের কাছেই পারমাণবিক অস্ত্রসহ আরও অনেক বড় বড় অস্ত্র রয়েছে।

মার্কিনীরা ইরানের বিরুদ্ধে বারবার যুদ্ধের হুমকি দিয়েও কেন পিছু হটছে। এর কারণ ইরানের কাছে অনেক বড় বড় অস্ত্র আছে যা আমেরিকাকে কোনঠাসা করে ফেলবে।

সম্প্রতি পারস্য উপসাগরে ইরানি আধাসামরিক বাহিনীকে ছোট ছোট নৌকায় ক্ষেপণাস্ত্র জড়ো করে রাখতে দেখা গেছে। এসব নৌকায় ক্ষেপণাস্ত্র দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে আমেরিকা। কারণ যুদ্ধ জাহাজে ক্ষেপনাস্ত্র থাকলে এক সাথে তা সহজে ধ্বংস করা সম্ভব। কিন্তু হাজার হাজার নৌকাকে এক সাথে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাছাড়া নৌকা মুহুর্তের মধ্যে গতিপথ বদলাতে পারে।

ইরানের সংসদবিষয়ক ও বিপ্লবী বাহিনীর উপপ্রধান মোহাম্মদ সালেহ জোকার বলেছেন, ইরানের স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পারস্য উপসাগরে থাকা মার্কিন যুদ্ধজাহাজে পৌঁছতে সক্ষম, নতুন যুদ্ধের সামর্থ্য আমেরিকার নেই।

যেসব অস্ত্রের কারণে ইরানকে ভয় পায় আমেরিকা তা হলো-

খলিজ ফার্স মিসাইল- শব্দের গতির চেয়েও দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র এটি। এটিকে যুদ্ধজাহাজ ও স্থলভাগ থেকে চালানো যায়। এ মিসাইলটিকে ইরান স্মার্ট মিসাইল হিসেবে গণ্য করে। খলিজ ফার্স মিসাইলটি তিন হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে টার্গেট হানতে সক্ষম।

শাহাব মিসাইল- ইরানের বিখ্যাত ক্ষেপণাস্ত্র শাহাব মিসাইল। মোট ৬টি শাহাব মিসাইল রয়েছে ইরানের কাছে। রাশিয়ার ‘এস এস-১’ ক্ষেপণাস্ত্রের আদলে তৈরি করা হয়েছে এগুলো। লিবিয়ার ও উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তায় ইরান এ ক্ষেপণাস্ত্রটি বানিয়েছে।

শাহাব ৪- মিসাইলটি তিন হাজার কিলোমিটার দূরে শত্রুদের ঘাঁটিতে আঘাত হানতে সক্ষম।

শাহাব সিরিজের মধ্যে শাহাব ৫- ক্ষেপণাস্ত্রটির ব্যাপারে ইসরাইলি মিডিয়াগুলো জানিয়েছে, ইরানের কাছে থাকা মিসাইলগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী।

ফাতেহ-১১০-ইরানের হাতে থাকা ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলোর মধ্যে ফাতেহ-১১০টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্র থেকে ভূপৃষ্ঠ এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে সমুদ্রে এটি অনায়াসেই ব্যবহার করা যায়।

কদর-১১০- ইরানের কদর ১১০ মিসাইলটি ইউরোপের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইরানের দ্রুতগতির ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে এটি অন্যতম। এ মিসাইলটি শত্রুর চোখ ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে অনায়েসে ঢুকে যেতে পারে।

 

নতুনসময়/এনএইচ