ঢাকা শুক্রবার, ১১ই এপ্রিল ২০২৫, ২৯শে চৈত্র ১৪৩১


আগ্নেয়গিরি "সুনামিতে ৪৩ জন নিহত ইন্দোনেশিয়ায়"


২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩৯

ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রার মধ্যবর্তী সুন্দা স্ট্রেট উপকূলে সুনামির আঘাতে কমপক্ষে ৪৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৮৪ জন।

ইন্দোনেশিয়ার সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি অনলাইন। এর আগে সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে প্রায় দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যান।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। সুনামিতে শতশত ঘরবাড়ি ও অসংখ্য হোটেল ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শনিবার রাতে ইন্দোনেশিয়ার মাটিতে আবারও আছড়ে পড়ে ভয়াবহ সুনামি। প্রথমে দক্ষিণ সুমাত্রার সুন্দা উপকূলে আঘাত করে প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। এরপর জাভা উপকূলেও আছড়ে পড়ে বড় বড় ঢেউ। জলবায়ু ও ভূতাত্তিক সংস্থা জানিয়েছে, এই প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস বা সুনামির কারণ হল ক্র্যাকাটোয়া আগ্নেয়গিরির জেগে ওঠা।
জানা গিয়েছে, এই আগ্নেয়গিরি থেকে আবারও অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। মাটির তলায় যে প্লেটগুলি থাকে, অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সম্ভবত সেখানে কোনও চাপের সৃষ্টি হয়েছে বা চিড় ধরেছে। সেই কারণেই সুনামি আছড়ে পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা ও জাভা উপকূলে। জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যবর্তী সুন্দা স্ট্রেট জাভা সাগরকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে প্যানদেগ্ল্যাং, দক্ষিণ লাম্পাং ও সেরাং এলাকায়।

মৃত মানুষের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। পূর্ণিমার কারণে সাগর আরও ফুঁসে উঠতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো পুরও নুগ্রহ সুনামির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, ভেসে যাওয়া সড়ক, গাড়ির ছবি পোস্ট করেছেন টুইটারে। অগ্ন্যুৎপাত ও সুনামির কারণে কিছু অধিবাসী মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নরওয়ের আগ্নেয়গিরিবিষয়ক আলোকচিত্রী ওয়েস্টিন লান্ড অ্যান্ডারসন বিবিসি ওয়ার্ল্ডকে জানান, সুনামির সময় পশ্চিম জাভার আনিয়ার সৈকতে ছিলেন তিনি। ওয়েস্টিন বলেন, "সৈকতে একা ছিলাম"। আমার পরিবারের লোকজন হোটেলের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। আমি ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য তোলার চেষ্টা করছিলাম। এর আগের দিন সন্ধ্যায় ভারী অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছিল। তিনি জানান, ঘটনার সময় বড় ঢেউয়ের আঘাতে অগ্ন্যুৎপাত বন্ধ হয়ে যায়, চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। হঠাৎ তিনি দেখতে পান বড় ঢেউ তেড়ে আসছে। তিনি দৌড়ে পালান। শুধু দুটো ঢেউ আসে। প্রথম ঢেউটি শক্তিশালী না হওয়ায় তিনি পালিয়ে হোটেল কক্ষে চলে আসতে পারেন। শক্তিশালী দ্বিতীয় ঢেউটি হোটেলের ওপর দিয়ে উঠে যায়। রাস্তায় থাকা গাড়িগুলোকে ভাসিয়ে নেয়। তিনি আরও জানান, হোটেলের সবাই পাশের বনে আশ্রয় নেন। এখনো তাঁরা সেখানে পাহাড়ের ওপরে অবস্থান করছেন।