প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে: খাজা আসিফ

গত সপ্তাহে কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতি সন্ত্রাসী হামলার পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের হামলার শঙ্কায় নিজেদের সামরিক বাহিনী প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।
সোমবার রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
গত ২২ এপ্রিল দুপুরে ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। এতে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ওই হামলার পুরো দায় একতরফাভাবে ইসলামাবাদের ওপর চাপিয়েছে দিল্লি।
প্রতিক্রিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে মোদির প্রশাসন। পাকিস্তানও এর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বলেছে, সিন্ধু নদের পানি আটকানো সরাসরি ‘যুদ্ধের উস্কানি’ হিসেবে বিবেচনা করবে তারা।
ইসলামাবাদে নিজের অফিসে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেছেন, আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি। কারণ এটা (ভারতের হামলা) এখন আসন্ন। ফলত আমাদের এখন পরিস্থিতি অনুযায়ী কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ভারতের বক্তব্য ক্রমশ আক্রমাণত্মক হচ্ছে। সরকারকে ভারতীয় আক্রমণের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী। তবে কেন অনুপ্রবেশ আসন্ন বলে মনে করা হচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে ভারতের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে রয়টার্স। তবে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
পেহেলগামে হামলার পর ভারত দাবি করছে, হামলাকারীদের অন্তত দুইজন পাকিস্তানের নাগরিক। তবে দিল্লির ওই দাবি কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামাবাদ। তারা ওই হামলার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এছাড়া পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে হামলাকারীদের পাকড়াও করে শাস্তির মুখোমুখি করার অঙ্গীকার করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন আসিফ। তিনি বলেছেন, আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছি। তবে আমাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে তারা (সেনাবাহিনী) পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে।
খাজা মুহাম্মদ আসিফ পাকিস্তানের একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজ দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা নিরসনে ঐতিহাসিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে দলটি।