এবার পাল্টা পদক্ষেপ পাকিস্তানের. সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত

ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকদারীদের হামলায় পর্যটক নিহতের ঘটনায় পাকিস্তানকে সরাসরি দোষারোপ করেছে ভারত। এতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে নয়াদিল্লি। এর অংশ হিসেবে দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ একতরফা স্থগিত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নয়াদিল্লির বিতর্কিত এই পদক্ষেপের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (এএসসি)। এক জরুরি বৈঠকে কমিটি স্পষ্ট করে জানায়, ভারতের পক্ষ থেকে যদি পাকিস্তানের আইনগত অধিকারভুক্ত পানির প্রবাহ পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটিকে তারা ‘যুদ্ধের ইঙ্গিত’ হিসেবে বিবেচনা করবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে গত মঙ্গলবারের হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ২৬ জন। এর মধ্যে একজন ছিলেন নেপালের নাগরিক। এই নৃশংস হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারতের সরকার। তবে ইসলামাবাদ এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ঘটনাটিকে ‘ভুয়া পতাকা অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
ইসলামাবাদ এই ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে, যার প্রভাব দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানায়, সিন্ধু পানি চুক্তির আওতায় পাকিস্তানের অধিকারভুক্ত পানির প্রবাহ বন্ধ বা বিকৃত করার যেকোনো পদক্ষেপ, কিংবা নিম্ন অববাহিকার অধিকার হরণ, সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে। পাকিস্তান এই ধরনের আগ্রাসনের জবাব দেবে জাতীয় শক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারতের বর্তমান আচরণকে বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয় যে, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতাগুলোকে ভারত ইচ্ছেমতো উপেক্ষা করছে। এই উত্তেজনা একমাত্র প্রতিবেশী দেশের জন্য নয়, গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
পাকিস্তান সরকার বিবৃতিতে ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত রাখার ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিন্ধু পানি চুক্তি একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও বাধ্যতামূলক চুক্তি, যা বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছে। এতে একতরফাভাবে চুক্তি স্থগিত রাখার কোনো সুযোগ নেই। ভারতের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন এবং আঞ্চলিক শান্তির পরিপন্থী।