আসামে পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা

ভারতের আসামে তিনসুকিয়াতে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাঙালি অধ্যুষিত তিনসুকিয়ার খেরবাড়ি গ্রামে গিয়ে দুর্বৃত্তরা এই পাঁচজনকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। তারা হলেন- শ্যামলাল বিশ্বাস (৬০), অনন্ত বিশ্বাস (১৮), অবিনাশ বিশ্বাস (২৩), সুবল দাস (৬০) ও ধনঞ্জয় নমশূদ্র (২৩)। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজার
ভারতীয় এ দুটি গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুখে কালো কাপড় বাঁধা সশস্ত্র ৫-৬ যুবক খেরবাড়ি গ্রামে গিয়ে বেছে বেছে এলাকাবাসীর মধ্যে কয়েকজনকে ‘আলোচনা আছে’ বলে ডেকে নিয়ে যায়। পরে পার্শ্ববর্তী ভূপেন হাজরিকা সেতুর কাছে নিয়ে গিয়ে সকলের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের তিন সদস্যসহ ৫ জন মারা যান। এ ঘটনাস্থলের মাত্র ৩০০ মিটার দূরেই ছিল পুলিশ চেকপোস্ট। পুলিশ আসার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
আসাম পুলিশের ধারনা, জঙ্গি সংগঠন উলফা (স্বাধীন) এই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করেছে উলফা। আলোচনাপন্থী উলফা নেতারাও হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন। তারা সরকার ও পুলিশের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দবি করেন।
উলফা নেতা অনুপ চেটিয়া এনডিটিভি ও আনন্দবাজারকে জানান, নিন্দনীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দোষীদের শাস্তি দিতেই হবে। সরকার ও পুলিশের কাছে দাবি, তারা যেন সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করে।
এই পাঁচ বাঙালি খুনের ঘটনায় স্থানীয় ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মনে করছে, রাজ্যে ফের বাঙালি নিধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঘটনার পর গোটা রাজ্যে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। হত্যার প্রতিবাদে বাঙালিরা আজ শুক্রবার ১২ ঘণ্টার হরতাল পালন করছে। বাতিনসুকিয়া জেলায়ও আজ হরতাল পালন করছে বাঙালি ছাত্র ফ্রন্ট।
ঘটনার নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছে, দায়ী ব্যক্তিদের কঠোরহস্তে দমন করা হবে।
এ ঘটনায় বিজেপিকে দায়ি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুয়াহাটির এক বাঙালি নেতা বলেন, ‘বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছিলেন, বাঙালিরা উইপোকা। ফের বাঙালি নিধন শুরু হলো। বিজেপি উইপোকা মারতে শুরু করলো।
গত ১৩ অক্টোবর গুয়াহাটিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাঙালিদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন উলফার সর্বাধিনায়ক পরেশ বড়ুয়া।
আরকেএইচ