ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


স্বেচ্ছায় ‘গরিব’ হলেন মার্কিন বিলিওনেয়ার, তৃপ্তি পেতে দান করলেন জীবনের সব উপার্জন


২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৩২

স্বপ্ন পূরণ করলেন এক বিলিওনেয়ার। নিজের অর্জিত সম্পদ দান করাই ছিল তাঁর স্বপ্ন। কয়েকশো কোটি টাকার মালিক হলেও নিজের সম্পত্তির শ্রীবৃদ্ধিই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল না। বাঁচার জন্য ন্যূনতম প্রয়োজনের অতিরিক্ত উপার্জিত অর্থ দান করেই জীবনকে সার্থক করতে চেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন মার্কিন বিলিওনেয়ার চাক ফিনে।

চালর্স চাক ফিনে। কলেজের সহপাঠী রবার্ট ওয়ারেল মিলানের সঙ্গে তিনি খোলেন ডিউটি ফ্রি শপ। বিমানবন্দরে রিটেল দোকানের এই চেন ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। দিনে দিনে ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে ফিনের ব্যবসা। মার্কিন কোটিপতিদের তালিকাতেও ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল, জীবদ্দশাতেই জীবনের সব রোজগার দান করবেন তিনি। এ কথা বেশ কিছু বছর আগেই জানিয়েছিলেন ফিনে।

সম্প্রতি ফিনের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। নিজের ৮০০ কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৮ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা)-এর সম্পত্তি বিশ্বের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে দান করেছেন তিনি। দানের মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণ করে স্বেচ্ছায় ‘গরিব’ হয়েছেন তিনি। স্বপ্ন পূরণের পর নিজের খুশিও গোপন করেননি তিনি।

ফোর্বস পত্রিকাকে এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘‘টাকার ব্যবহার অন্যরকম ভাবে করতে চেয়েছিলাম। এই কাজ আমায় তৃপ্তি দিয়েছে। স্বপ্ন পূরণ করতে পারায় আমি খুব খুশি।’’

কোটিপতি হওয়ার পর থেকেই গোপনে বিভিন্ন সংস্থাকে দান করতেন তিনি। কিন্তু সেই খবর প্রকাশ্যে আনতেন না। এ জন্য তাঁকে ‘জেমস বন্ড অব ফিলানথ্রপি’ বলেও ডাকা হত তাঁকে। ২০১২ সালে ফিনে ঘোষণা করেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রীয়ের অবসর জীবনের জন্য ২০ লক্ষ ডলার রেখে দেবেন। বাকি সব সম্পত্তি দান করবেন। ১৪ সেপ্টেম্বর জুমে সম্পত্তি দানের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন।

নিজের ৮০০ কোটি ডলার সম্পত্তির মধ্যে ৩৭০ কোটি ডলারই শিক্ষা খাতে খরচের জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়েছেন। এ ছাড়াও মানবাধিকার, সামাজিক পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য খাতে তাঁর দানের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য। তাঁর এই মনোভাবে রীতিমতো আপ্লুত বিল গেটস, ওয়ারেন বাফেটের মতো মার্কিন কোটিপতিরাও। বিল গেটস জানিয়েছেন, ‘‘ফেনি একটা পথ দেখাল। আমার মনে পড়ছে, তাঁর সঙ্গে যখন দেখা করেছিলাম, তখন জীবদ্দশায় নিজের অর্ধেকেরও বেশি সম্পত্তি দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। এ ব্যাপারে ফিনের থেকে ভাল উদাহরণ আর কেউ নেই।’’

তবে শুধু দান নয়, ৮৯ বছরের ফিনে জীবনযাত্রার মানও ছিল খুবই সাধারণ। সান ফ্রান্সিসকোর একটি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রীয়ের সঙ্গে থাকেন তিনি। নিজের গাড়িও নেই তাঁর। এক জোড়া জুতোতেই বছর কেটে যায় তাঁর। ‘সম্পদ দায়িত্ব আনে’— এই চিন্তা থেকেই নিজের সম্পত্তি দান করে সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সুত্র , আনন্দবাজার পত্রিকা ।