ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল ২০২৪, ৪ঠা বৈশাখ ১৪৩১


অযোধ্যার বিতর্কিত স্থান হবে মন্দির, মসজিদের জন্য পৃথক জায়গা


১০ নভেম্বর ২০১৯ ০০:২৯

প্রতিকি

বহুল আলোচিত অযোধ্যার বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়া মুসলিমদের জন্য অযোধ্যার অন্য স্থানে পাঁচ একর জায়গা বরাদ্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ স্পর্শকাতর এই মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এই রায় কারও জন্য ‘জয় বা পরাজয়’ হবে না। সিরিজ টুইট বার্তায় মোদি সবাইকে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখা আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ভারতের ঐতিহ্য মেনে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখা মানুষজনের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।

আদালত তার রায়ে বলেন, শর্তসাপেক্ষে ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি পাবেন হিন্দুরা। আদালত বলেন, ওই জমি রামলালারই। একইসঙ্গে কেন্দ্রকে তিন মাসের মধ্যে ওই জমিতে মন্দির তৈরির জন্য ট্রাস্ট গঠনের সময়সীমা বেঁধে দিলো আদালত। ট্রাস্টের নজরদারিতেই তৈরি হবে রামমন্দির। তবে ট্রাস্টে রাখতে হবে নিমোর্হী আখড়ার প্রতিনিধিদের।

আদালত তার রায়ে ঐক্যমতের ভিত্তিতে শিয়া সংগঠনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। খারিজ করে দিয়েছেন নির্মোহী আখড়ার দাবিও। আদালত বলেন, নির্মোহী আখড়া সেবায়েত নয়।

প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অযোধ্যা মামলায় শীর্ষ আদালতে রায় পড়ে শোনালেও সঙ্গে রয়েছেন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজির। রায়ের শুরুতে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, কারও বিশ্বাস যেন অন্যের অধিকার না হরণ করে। সংবিধান সব ধর্মকে সমান অধিকার দিয়েছে। তাই মসজিদ তৈরির জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বিকল্প ৫ একর জমি অযোধ্যাতেই দেয়া হবে।
এদিকে ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ (এএসআই)-র রিপোর্টকে প্রাধান্য দিয়েই এই রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

বিচারপতিরা রায়ে জানিয়েছেন, মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে এমন কোনও প্রমাণ না পাওয়া গেলেও ফাঁকা জমিতে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়নি। মসজিদের নিচে পুরনো কোনও নির্মাণ বা কাঠামো রয়েছে। তবে সেখানে কোনও মন্দির ভাঙা হয়েছিল কিনা তা নিশ্চিত নয়। তবে খননকার্যের রিপোর্টে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে বলা হয়েছে, ওই ধ্বংস হওয়া কাঠামো কোনও ইসলামিক স্থাপত্য নয়।

আদালত বলেন, বিতর্কিত এলাকায় প্রার্থনা করতেন মুসলিমরা। সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারি না। জমির মালিকানা প্রমাণ করতে পারেননি মুসলিমরা। বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে না আইন।

আদালত আরও বলেন, ওই জায়গায় জন্মেছিলেন রাম, এটা হিন্দুদের বিশ্বাস। বিভিন্ন বইয়ে তার উল্লেখ আছে। সেই বিশ্বাসও এভাবে মেনে নেয়া যায় না। তবে সেই দাবির বিরোধিতাও কেউ করেনি।

এছাড়া বিতর্কিত এই স্থান তিন ভাগে ভাগ করা এলাহাবাদ হাইকোর্টের ভুল ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কিত জমি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে মুম্বাইয়ে কমপক্ষে ৪০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ড্রোন ও সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।