কাশ্মীরে যাও, সুন্দরীদের বিয়ে করো

জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর আনন্দে ভাসছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলো। ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতা কর্মীরা এখন ভূস্বর্গ হিসেবে খ্যাত উপত্যকায় জমি কেনা এবং সুন্দরী কাশ্মীরি নারীদের বিয়ে করারও স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। নিজেদের এই গোপন আকাঙ্খা প্রকাশ করেছেন কোনো কোনো নেতা। এদেরই একজন হলেন বিজেপি নেতা বিক্রম সাইনি। তিনি প্রকাশ্যে দলের অবিবাহিত কর্মীদের প্রতি সুন্দরী কাশ্মীরি কন্যাদের বিয়ে করা ও সেখানে জমি কেনার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সম্বলিত ধারা ৩৭০ বাতিল করার পরদিনই কাশ্মীরের মুজাফফরনগরে এই মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা বিক্রম সাইনি।
তিনি বলেন, মোদিজীকে ধন্যবাদ। তিনি আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন। এ আনন্দে ড্রাম বাজাচ্ছে গোটা ভারত। বিজেপিতে অবিবাহিত কর্মীরা, যারা এতদিন ধরে কাশ্মীরের সুন্দরী নারীদের বিয়ে করার স্বপ্ন দেখছে, তারা এখন নির্ভয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। তোমরা সবাই কাশ্মীরে যাও এবং সেখানকার সুন্দরী নারীদের বিয়ে করো। একই সঙ্গে সেখানকার জমাজমির মালিক হও।
বিজেপির এই নেতা আরও বলেন দেশের মুসলিম যুবকদেরও খুশি হওয়া উচিত কারণ তারাও এখন কোন শঙ্কা ছাড়াই কাশ্মীরের সুন্দরী মেয়েদের বিয়ে করতে পারবে।
তার এই কুৎসিত মন্তব্যের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে খোদ ভারতেই। তবে বিক্রম সাইনির জন্য এ ধরনের অশ্লীল মন্তব্য কোনো নতুন বিষয় নয়। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি এক জনসভায় বলেছিলেন, আমি আমার বউকে আরো বেশি করে বাচ্চাকাচ্চা পয়দা করতে বলেছি, যাতে হিন্দু জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বউ এতে রাজি হয়নি। সে বলেছে, আমাদের দুই সন্তানই যথেষ্ট।
এর আগে তিনি ভারতে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন বন্ধ করার দাবি তুলেছিলেন। এ নিয়ে তার বক্তব্য ছিল, নববর্ষ উদযাপন কেন করা হবে, এটা তো কোনো হিন্দু উৎসব নয়? কেবল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এই থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করে। তাই ভারতীয়দের এই উৎসব পরিহার করা উচিত।
তবে কেবল বিজেপি নয়, কাশ্মীর নিয়ে এ ধরনের লজ্জাকর মন্তব্য করেছে বজরং দল ও হিন্দু যুব বাহিনীর মত কট্টরপন্থি হিন্দু দলগুলো। কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের খবরে এসব দলের নেতা কর্মীরা মিষ্টি বিতরন করেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যেই তারা কাশ্মীরে গিয়ে জমাজমি ক্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত এই উপত্যকার নারীদের রূপ ও গুণের খ্যাতি রয়েছে বিশ্ব জুড়ে। বলা হয়ে থাকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরী এই রাজ্যের মেয়েরা। কেবল এশিয়া নয়- সাগরের মত নীল চোখ, আপেলের মত গায়ের রং আর মিষ্টি হাসি আর ঐতিহ্যবাহী পোশাকের কল্যাণে তারা সবার মন জয় করে নিয়েছে।