ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


বাংলাদেশের যেখানে মাত্র ৫ টাকায় মিলছে ‘লাঞ্চ’


১৩ অক্টোবর ২০১৮ ২১:২১

প্রতীকী ছবি

মাত্র পাঁচ টাকায় মিলছে দুপুরের খাবার। তাও আবার বিভিন্ন বিলাসবহুল আইটেমে। ভাতের সঙ্গে আছে মাছ-গোশত, ভর্তা, সবজি ও ডাল। অবিশ্বাস্য মনে হলেও বিষয়টি সত্য। বাজারমূল্য যখন ঊর্ধ্বগতি, রেস্তোরোয় বসলেই যখন শত টাকার কারবার, তখন মাত্র পাঁচ টাকায় এত খাবার। এটা কিভাবে সম্ভব?

এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে প্রাণ এ্যাগ্রোর নাটোরের কারখানায়। প্রাণের সব শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা মাত্র পাঁচ টাকায় খাবার খেতে পারেন। খাবারের মানও উন্নত মানের বলে সন্তুষ্ট শ্রমিকরা। একদিন মাছ তো অন্যদিন মাংস। ডাল থাকছে নিত্যদিন। আর ভাজি বা ভর্তার কোনো একটি পছন্দ মতো।

২০১২ সাল থেকে এই ফ্যাক্টরিতে কাজ করছেন শ্রমিক আবু বকর। তিনি বলেন, প্রাণ তো আমাদেরই প্রতিষ্ঠান। আমরা ভালো থাকলে কারখানাও ভালো থাকবে। এ কারণে কর্তৃপক্ষ দুপুর বা রাতে মাত্র পাঁচ টাকার বিনিময়ে খাবারের ব্যবস্থা করেছে। খাবার নিয়ে কারও কোনো আপত্তি নেই। প্রতিদিন মাছ অথবা মাংস থাকবেই। যার যেটা ইচ্ছা, সেটাই খেতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের সঙ্গে স্যারেরাও (ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা) খাবার খেয়ে থাকেন প্রতিদিন। খাবার টেবিলে কোনো ভেদাভেদ নেই। ক্যাফেটেরিয়ায় সবাই সমান। এটিই বড় আনন্দের বিষয়।

এদিন ফ্যাক্টরির প্রাণ মসলা বিভাগে শিফট ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছিলেন মোছাম্মত শিউলি। বলেন, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার বাইরেও প্রতিটি ফ্লোর বা বিভাগে খাবার পরিবেশন হয়। দর একই। পাঁচ টাকায় খাবার! শুনলে অনেকেই অবাক হন। কিন্তু এটিই সত্য। আমরা পাঁচ টাকা দিয়েই খাবার কিনে খাই। এতে খাবারে যেমন নিজের অংশগ্রহণ থাকছে, আবার সাশ্রয়ও মিলছে। একেবারে ফ্রি খাচ্ছি না বলে নিজের কাছে খারাপ লাগে না।

প্রাণ কারখানার জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কাদের সরকার বলেন, এখানে শ্রমিকের স্বার্থই আগে। শ্রমিক ভালো থাকলে কারখানা ভালো থাকবে- এটিই প্রাণ কোম্পানির নীতি। পাঁচ টাকায় দুপুর বা রাতের খাবার পরিবেশন হয় সবার জন্য। খাবারে সবার অংশগ্রহণ রাখতে সামান্য এই টাকা নেয়া।

খাবারের মান কেমন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে সকল কর্মকর্তা খাবার গ্রহণ করেন। দিন দিন কারখানার সমৃদ্ধি ও সাফল্যের মূল মন্ত্র মূলত এখানেই।’

এমএ