ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতির যোগ্যতা


২৭ আগস্ট ২০১৯ ০১:১১

ফাইল ফটো

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি হতে যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক পাস নির্ধারণ করা হচ্ছে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রস্তাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে প্রধান শিক্ষক সদস্যসচিব, একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, নিকটবর্তী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক প্রতিনিধি, জমিদাতার একজন প্রতিনিধি, কাউন্সিলর বা ইউপি সদস্য, শিক্ষানুরাগী দুইজন, অভিভাবক প্রতিনিধি চারজনসহ মোট ১১ জন সদস্য নির্বাচন করা হয়। তাদের মধ্যে একজনকে সভাপতি ও একজনকে সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

জানা গেছে, অনেক বিদ্যালয়ে কমিটির সভাপতি হিসেবে নিরক্ষর ব্যক্তিকে নির্বাচন করায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও শিক্ষার মান বাড়াতে তারা কোনো ধরনের সহায়তা ও দিক-নির্দেশনা দিতে পারেন না, বরং বিদ্যালয়ের উন্নয়নসহ বিভিন্ন অর্থ হাতিয়ে নিতে ব্যস্ত থাকেন। অনেক সময় শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকেন। সভাপতিরা স্থানীয় ব্যক্তি ও ক্ষমতাবান হওয়ায় নানা ধরনর অনিয়ম করলেও শিক্ষকরা ভয়ে তাদের বাধা দেন না। এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে আসায় যোগ্য ব্যক্তিদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি নির্বাচন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এফ এম মঞ্জুর কাদির জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিরা বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তাদের অনেক সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হয়। যদি সভাপতি অযোগ্য হয় তবে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে। তাই বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান বাড়াতে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাকে সভাপতি হতে হলে স্নাতক বা ডিগ্রি পাস হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি কার্যকর করতে মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাবনা তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবনা তৈরি ও তার যৌক্তিকতা তুলে ধরে দ্রুত এ প্রস্তাব পাঠানো হবে। এটি কার্যকর করতে মন্ত্রণালয়ে সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

রাজবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতা ফরিদ আহমেদ বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ্য সভাপতি না থাকলেও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও কল্যাণে তারা কোনো ধরনের ভূমিকা তো রাখেনই না, বরং আরও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। এমনকি কোনো অনুষ্ঠানে এসব ব্যক্তিরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনোবল তৈরিতে গঠনমূলক বক্তব্যও দিতে পারেন না। তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়াতে কমিটির সভাপতিকে অবশ্যই শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের কমিটির সদস্য করার দাবি জানান তিনি।