ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


রাইসমিল বন্ধ থাকায় কৃষকেরা ধানের সঠিক মুল্য পাচ্ছে না


১৯ মে ২০১৯ ০২:০৫

নতুনসময় ছবি

রাইসমিল বন্ধ থাকাই কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার মূল কারণ বলে অভিযোগ করেন বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স এসোসিয়েশনের। শনিবার (১৮মে) ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটিতে এ,কে,এম খোরশেদ আলম খানের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স এসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

এসময় বক্তারা বলেন, সম্প্রতি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ও শ্রমিকের মজুরি জনপ্রতি ১০০০ টাকা হওয়ায় কৃষক কৃষি জমির পাকা ধান ক্ষেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানায়। তবে বর্তমানে ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে কৃষক বঞ্চিত হচ্ছে ইহা বাস্তব ঘটনা। কৃষকেরা ৫০০টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করার মতো ক্ষেত্র খুঁজে পাচ্ছে না।

তারা আরো বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ব্যাপকভাবে অটো রাইসমিল সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা ধান চাষে উৎসাহী হয়ে ধানের চাষ বাড়িয়ে দেয়। কারণ তাদের উৎপাদিত ধানের রাইসমিল মালিকরা ন্যায্য মূল্যে কিনে নিতেন। এতে করে বিগত ১০-১২ বছর পর্যন্ত ধানের মূল্য স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের সিডিউল ব্যাংক গুলো কিছুসংখ্যক অটো রাইসমিল মালিকদের ২০ থেকে দুই হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত চলতি মূলধন প্রদান করেন। অথচ শতকরা ৯০ ভাগ অটো রাইসমিল মালিকদের ৫০ কোটি টাকা প্রদান করে। আর্থিকভাবে বৈশম্যের সৃষ্টি হয় ও এর পাশাপাশি বড় বড় গ্রুপ কোম্পানি আসায় ৫০ লাখ থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত মূলধন পাওয়া কোম্পানি গুলোর মধ্যে শতকরা ৬০ থেকে ৭০ ভাগ রাইসমিল বন্ধ হয়ে যায়। কারণ মূলধন না থাকা অন্যদিকে এই বড় বড় গ্রুপ কোম্পানির সাথে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে না পারা।

আরো বলেন, আমরা ৬৮ হাজার গ্রামের কৃষক ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অটো রাইসমিল মালিক একে অপরের সম্পূরক। ধান চাষ না হলে অটো রাইসমিল যেভাবে টিকে থাকবে না। তেমনি অটো রাইস মিল বন্ধ হয়ে গেলে কৃষকরা ধান বিক্রি করার ক্ষেত্র খুঁজে পাবে না এবং ধান চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। এরই প্রমাণ হচ্ছে মিলগুলো বন্ধ থাকায় কৃষকরা তাদের ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কৃষকদের দাবি গুলো হল: কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত কৃষক সনাক্ত করা। শতকরা ২ ভাগ হারে কৃষি ঋণ বিতরণ করা। কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ৫ থেকে ৭ বছর মেয়াদী বিনা সুদে ব্যাংক এর মাধ্যমে সরবরাহ করা। কৃষকের সেচের বিদ্যুৎ বিল ইউনিট প্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা নির্ধারণ করা। অটো রাইস মিলের কিছু দাবি তারা তুলে ধরেন: বন্ধকৃত অটো রাইসমিল গুলোর ব্যাংক ঋণের সুদ মওকুফ করে রিসিডিউল এর মাধ্যমে ২৫ থেকে ১০০ কোটি টাকা চলতি মূলধন প্রদান করতে হবে। সুদের হার কৃষি শিল্প হিসেবে ৪ থেকে ৫ টাকা ইউনিট নির্ধারণ করতে হবে। বিদেশ থেকে আপাতত চাল আমদানির ওপর শুল্ক হার শতকরা ২৮ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৪০ ভাগে উন্নত করত হবে। দাবিগুলো শতভাগ পূরণ হলে বাস্তবায়িত হলে ধান উৎপাদনে খরচ কমে যাবে। কৃষকদের মধ্যে হাহাকার থাকবে না। চালের বাজারে মূল্য স্থিতিশীল থাকবে। অন্যদিকে কৃষক তার উৎপাদিত ধান বিক্রির ক্ষেত্রে খুঁজে পাবে এবং ন্যায্য মূল্য হতে বঞ্চিত হবে না। বর্তমানে কৃষকরা ধানের মূল্য না পাওয়ায় রংপুরে কিছু এলাকায় নিজ উদ্যোগে নীল চাষ শুরু করেছেন। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানানো হয়।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, এম এ আজিজ ( সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ অটো রাইসমিল ওনার্স এসোসিয়েশন) প্রমুখ।

নতুনসময়/আল-এম