ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দিয়েছে এস্কয়ার


১১ মার্চ ২০১৯ ০০:৩২

গত ৭ মার্চ শেয়ারহোল্ডারদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসেবে শেয়ার জমা হয় বলে সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে জানা গেছে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) বরাদ্দ পাওয়া শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দিয়েছে এস্কয়ার নিট কম্পোজিট কর্তৃপক্ষ।

আবেদনকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দ দেয়ার লক্ষ্যে গত ৭ ফেব্রুয়ারি আইপিও লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে ৬ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন গ্রহণ করা হয়।

বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে কোম্পানিটি ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এ টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের এপ্রিলে রোডশো করে প্রতিষ্ঠানটি।

ওই রোড শোতে এস্কায়ার নিট কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ৫৭৬ কোটি টাকার ব্যবসা সম্প্রসারণ করবে। এরমধ্যে শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা হবে ১৫০ কোটি টাকা। বাকি অর্থের মধ্যে ৩৪০ কোটি টাকা বৈদেশিক ও দেশি ঋণ এবং ৮৬ কোটি টাকা কোম্পানির মুনাফা থেকে সংগ্রহ করা হবে।

শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকার মধ্যে ১০০ কোটি ৪২ লাখ টাকা দিয়ে ভবন নির্মাণ, ২১ কোটি ২৩ লাখ টাকা দিয়ে ইয়ার্ন ডাইং মেশিন ক্রয়, ২১ কোটি ৯১ লাখ টাকা দিয়ে ওয়াশিং প্লান্ট মেশিন ক্রয় ও বাকি ৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা আইপিও বাবদ খরচ করা হবে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

রোড শোর প্রায় এক বছর পর ২০১৮ সালে কোম্পানিটির শেয়ারের কাট অফ প্রাইস নির্ধারণে বিডিংয়ের অনুমোদন দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

বিএসইসির অনুমোদন পেয়ে ওই বছরের ৯ জুলাই থেকে ১২ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিডিংয়ে অংশ নেয় যোগ্য বিনিয়োগকারীরা। বিডিংয়ে কোম্পানিটির কাট অফ প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৪৫ টাকায়।

এরপর গত বছরের ২৭ নভেম্বর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে কোম্পানিটির ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৯৫ হাজার ৮৩৩টি সাধারণ শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ইস্যু করার অনুমোদন দেয় বিএসইসি।

এরই ধারাবাহিকতায় কোম্পানির ১ কোটি ৪ লাখ ৬২ হাজার ৫০১টি সাধারণ শেয়ার ৪০ টাকা মূল্যে (কাট অফ প্রাইস থেকে ১০ শতাংশ বাট্টায়) সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট বিক্রি করা হয়। বাকি ২ কোটি ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩২টি শেয়ার ৪৫ টাকা মূল্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের নিকট ইস্যু করা হয়।

রোড শোর সময় প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহ করা আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১৯৬ কোটি ৭ লাখ টাকা আয় করেছে। যা ব্যয় শেষে নেট মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৫৫ পয়সা। আর ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ২৬ পয়সা।

পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের বিষয়ে রোড শোতে এস্কয়ার নিট কম্পোজিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান উল হাবিব বলেন, ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ায় কোম্পানির ব্যবসায় সম্প্রসারণ করা হবে। এক্ষেত্রে ৫৭৬ কোটি টাকা প্রয়োজন। এরমধ্যে ১৫০ কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া ৩৪০ কোটি টাকা বৈদেশিক ও দেশি ঋণ এবং ৮৬ কোটি টাকা কোম্পানির মুনাফা থেকে সংগ্রহ করা হবে। সংগৃহীত অর্থ দিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকায় এবং কাঁচপুরে নিজস্ব জমিতে ব্যবসা সম্প্রসারণের কাজ করা হবে।

তিনি জানান, এস্কয়ার নিট কম্পোজিট ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭ বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটি অনেক আন্তর্জাতিক সনদ অর্জন করেছে। এরমধ্যে রয়েছে একর্ড, এনএবিএল, সিজিএস, ব্যুরো ভেরিতাস, বিএসসিআই, অর্গানিক এক্সচেঞ্জ থেকে সনদ।

তিনি আরও জানান, কোম্পানিটি বছরে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করে, কর্মরত আছেন ৮ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। ব্যবসা সম্প্রসারণ হলে নতুন করে আরও ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। বর্তমানে কোম্পানিতে নিটিং, ফেব্রিক ডাইং, প্রিন্টিং, এমব্রয়ডারি, ইন্ডাস্ট্রি লন্ড্রি ইত্যাদি সুবিধা রয়েছে।

এস্কয়ার নিট কম্পোজিটকে পুঁজিবাজারে আনতে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছে প্রাইম ফিন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।

নতুনসময় / আইআর