ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


খুচরা বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় : বাণিজ্যমন্ত্রী


২ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৪১

নতুন সময়

পিয়াজের বাড়তি দাম আরও কিছুদিন থাকবে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, খুচরা বাজার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এর জন্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দায়ী। তাদের নিয়ন্ত্রণ করার মতো জনবল আমাদের নেই। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে তিন দিনের ‘লেদারটেক বাংলাদেশ ২০১৯’-এর প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পিয়াজের দাম না কমার জন্য কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও দায়ী। সরকারের ১০টি মনিটরিং টিম কাজ করছে। কিন্তু মনিটরিং করে পিয়াজের দাম শতভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের এতো জনবল নেই। পিয়াজ উৎপাদনে আমাদের আত্মনির্ভর হতে হবে। ভারত হঠাৎ পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে আমাদের বিপদে ফেলেছে। তাই পিয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের ভাগ্য ভালো, মায়ানমারের সঙ্গে আমাদের ল্যান্ড কানেকশন রয়েছে। তাই আমরা দেশটি থেকে পিয়াজ আমদানি করছি। টেকনাফে ল্যান্ড করতে পিয়াজের আমদানি খরচ প্রতিকেজি পড়েছে ৭৫ টাকা। তাই পিয়াজের দাম কমছে না। এ সমস্যা সমাধান করতে হলে পিয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।

পিয়াজের দাম দিন দিন কমছে না বরং বাড়ছে। রাজধানীর পাইকারি বাজারে কেজিতে ৫ টাকা কমলেও খুচরা পর্যায়ে এর তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করছেন বিক্রেতারা। গত দেড় মাস ধরে পিয়াজের বাজারে নাকাল ভোক্তারা। রাজধানীর শ্যামবাজারে বৃহস্পতিবারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। বাজারে ঢুকেছে পিয়াজ, কমেছে দামও। তবে বিক্রি কম হচ্ছে বলে জানালেন আড়তদাররা। তবে পাইকারি বাজারে পিয়াজ কিনতে এসেও স্বস্তি পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। আগামী মৌসুমে সরকার পিয়াজের আমদানি বন্ধ রাখার কথা ভাবছে বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

মিসর থেকে পিয়াজ আমদানির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিসর থেকে পিয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। এতো দূর থেকে আমদানি করতে ব্যবসায়ীদের মাইন্ড সেটআপ করতেও একটু সময় লেগেছে। তাই ধীরে ধীরে পিয়াজের বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে। তবে এ সমস্যা সমাধান করতে হলে পিয়াজ উৎপাদনে আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।

উল্লেখ্য, ৩০ অক্টোবর বুধবার পাইকারি বাজারেই পিয়াজের কেজি ১২০ থেকে ১৩৫ টাকায় উঠে। কাওরান বাজারের পাইকারি বাজারে দেশি পিয়াজের দাম এখন ১২০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পিয়াজও ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর মিসরের পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের দেশি পিয়াজ ১৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একটু নিম্নমানের দেশি পিয়াজ ১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আমদানি করা পিয়াজও বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ১২০-১৩৫ টাকার মধ্যে। এক সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে পিয়াজের দাম। রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির খোলাবাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে পিয়াজ বিক্রি ও বাজার অভিযানে কোনভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না পিয়াজের দামে। সরকারি বিক্রয় সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যে দেখা গেছে, এক বছরে পণ্যটির দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ। আর এ মাসে বেড়েছে ৬১ শতাংশ। টিসিবির তথ্য বলছে, এক বছরে পণ্যটির দাম বেড়েছে ২০০ শতাংশ। আর এ মাসে বেড়েছে ৬১ শতাংশ। টিসিবি বলছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দেশি ও আমদানি করা পিয়াজের দাম ছিল কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। ঠিক এক মাস পর পিয়াজের দর হয়েছে কেজি ১০৫ থেকে ১২০ টাকা।

নতুনসময়/এসএম