ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০

বিকৃত যৌনকর্মে খালেক কে হত্যা, রোহমর্ষক বর্ণনা খুনির


৭ এপ্রিল ২০২১ ২২:৩৫

সংগৃহিত

পুরুষে-পুরুষে বিকৃত যৌনকর্মের কারনেই মানিকগঞ্জের আলোচিত দিনমজুর খালেক প্রামাণিককে হত্যা করা হয়। হত্যায় জড়িত একমাত্র আসামীকে পিবিআই গ্রেফতার করলে এসব তথ্য জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম আব্দুল হালিম ( ২২ ) নাটোর ।

গত ৭ মার্চ রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টর মধ্যে যে কোন সময় মানিকগঞ্জ সদর থানাধীন আটিগ্রাম ইউনিয়নের চরবিরাটি গ্রামে এ হত্যাকান্ড ঘটে।

গত ৬ মার্চ পিবিআই মানিকগঞ্জ তদন্তভার গ্রহণ করে। পিবিআই প্রধান জনাব বনজ কুমার মজুমদারের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সমর্থ হয় ।

ঘটনার বিবররে জানা যায়, খালেক প্রামানিক পেশায় একজন দিনমজুর । নিজ জেলা রাজবাড়ী হতে কাজের সন্ধানে মানিকগঞ্জে আসে । বাড়ী হতে গত ২২ ফেব্রুয়ারী বিভিন্ন জায়গায় কাজ করার পর গত ৫ মার্চ আব্দুল লতিফ মানিকগঞ্জ লেবার মার্কেট হতে দুইজন শ্রমিক কাজের জন্য কিনে আনে । দুইজন শ্রমিকের বাড়ী আলাদা আলাদা জেলা এবং একে অপরের অপরিচিত । কাজের তাগিদে লেবার মার্কেট হতে দুজন একসঙ্গে কাজ ত্রার জন্য আব্দুল লতিফের সঙ্গে তার বাড়ীতে আসেন । নিহত খালেক প্রামানিক ও ছদ্দনাম সাগর একসঙ্গে রাত্রের খাবার শেষে একই বিছানায় ঘুমায় । তারা ০৫ মার্চ , ০৬ মার্চ ও ০৭ মার্চ প্রতিদিনের ন্যায় খাবার শেষে একই বিছানায় ঘুমাতে যায় । তারা ৭ মার্চ জনৈক সোহরাব উদ্দিনের বাড়ীতে ঘুমায় । পরদিন ৮ মার্চ দিনমজুর খালেকের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় । ঘটনাটি ৭ মার্চ , ২১ তারিখের দিবাগত রাত্রে যে কোন সময় হয়ে থাকতে পারে । ঘটনার পর হতেই মৃত খালেক প্রামানিকের সহকর্মী দিনমজুর সাগর পলাতক থাকে । খালেক প্রামানিকের মোবাইল ফোন নম্বরও খুঁজে পাওয়া যায় নাই । নিহত দিনমজুর খালেক প্রামানিকের সহযোগীর নাম ঠিকানা যোগাযোগের কোন ফোন নম্বরও কারো জানা ছিল না । শুধুমাত্র পলাতক ব্যক্তির দৈহিক বর্ণনা পাওয়া যায় এবং খাবার খাওয়ার আগে কাহী ভাত দেন ” এই ভাষায় কথা বলত ।

তথ্য - প্রমাণাদির মধ্যে দৈহিক বর্ণনা ও কথার ধরন ব্যতীত অন্য কোন তথ্যই পাওয়া যায় নাই । ছায়া তদন্তের অংশ হিসেবে পিবিআই মানিকগঞ্জ ক্রাইমসিন দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন । অত্র এলাকার কোন ব্যক্তিই পলাতক ব্যক্তি সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে নাই তবে তিনদিন ধরে লতিফ ও সোহরাবের বাড়ীতে অবস্থান করার সময় তার হাতে একটি মোবাইল ফোন ছিল বলে জানায় । ঘটনার পরপরই থানা পুলিশসহ ডিবি , সিআইডি , র‌্যাব ও পিবিআই মানিকগঞ্জ তদন্ত করতে থাকে । পিবিআই মানিকগঞ্জ জেলা পলাতক ব্যক্তির খোঁজ নিতে নিহত দিনমজুর খালেক প্রমানিক এর পরিবার ও আত্নীয় স্বজনদের সাথে কথা বলে পলাতক ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে কিন্তু কেউ কোন তথ্য দিতে পারে নাই । প্রযুক্তি ও গোপন তথ্য বিশ্লেষন করে সন্দেহভাজনকে সনাক্ত করা হয় ।

পিবিআই মানিকগঞ্জ জেলা টিম গত গত এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে নাটোর জেলার সিংড়া থানাধীন বড় সাঐল বাজার এলাকা থেকে আসামী আব্দুল হালিম ( ২২ ) আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় একমাত্র আসামী আব্দুল হালিম কাজের উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ী নাটোর হতে গত ৪মার্চ মানিকগঞ্জ জেলায় আসে । মানিকগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ডে অনেক লেবারের মত সেও কামলা বিক্রয় বা শ্রম বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে দাঁড়ায় । ঐ দিনে সন্ধ্যার পর অপর দিনমজুর খালেক প্রামানিক এর সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং রাতে তাদের দুইজনকে সদর থানাধীন আটিগ্রামের আঃ লতিফ ক্রয় করে নিজ বাড়ীতে নিয়ে যায় । তারা দুইজন রাত্রে আঃ লতিফের বাড়ীতে রাত্রী যাপন করে । গভীর রাত্রে খালেক প্রামানিক আব্দুল হালিমের লিঙ্গে হাত দিয়ে নারাচারা করে উত্তেজিত এবং বয়স্ক খালেকের পায়ুপথে হালিম যৌন কর্ম করে । ঐ রাত্রে দুইবার অপ্রাকৃতিক যৌনকর্ম করে । পরদিন আঃ লতিফের বাড়ীতে রাত্রে একই কর্ম করে । পরদিন তারা দুইজন একে গ্রামের সোহরাবের বাড়ীতে কাজের জন্য আসে এবং সেখানেও বসত ঘরের বারান্দার কক্ষে রাত্রীযাপন করে । এখানেও রাত্রে তারা একই কর্ম করে ।

পরদিন অর্থাৎ ৭ মার্চ দিবাগত রাত অনুমান আড়াইটার দিকে আসামী হালিম প্রাকৃতিক কর্ম করার জন্য সোহরাব এর বাড়ীর দক্ষিণ পার্শে পায়খানায় যায় এই সময় নিহত খালেক প্রামানিক গামছা পড়ে পায়খানার সামনে আসে । হালিম পায়খানা থেকে বের হয়ে গামছা পড়া অবস্থায় খালেক প্রামানিককে দেখে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে আসার সময় খালেক তাকে ধরে ফেললে হালিম খালেকের গলায় রশি পেঁচিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং শয়ন কক্ষের দিকে চলে আসতে থাকে । খালেক পিছনে পিছনে এসে হালিমকে ধরে মুখ চাপা দিয়ে টানা হেচড়া করে পায়খানার দিকে নিয়ে যায় ।

এই সময় খালেকের পড়নের গামছা খুলে যায় । আসামী হালিম সেই গামছা দিয়ে খালেক মনিকের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে উলঙ্গ অবস্থায় বাথরুমের খুটির সাথে বেঁধে রেখে নিজের ব্যবহৃত কাপড় চোপড় ও নিহত খালেক প্রামানিকের মোবাইল সহ পলাতক হয় । পরবর্তীতে আসামী হালিম ধূত হওয়ার সময় তার হেফাজত হতে নিহত খালেক প্রামানিকের মোবাইলটি উদ্ধার হয় । নিহত খালেক প্রামানিক আসামীকে সাগর নামে ডাকলেও আটকের পর আসামী তার প্রকৃত নাম আব্দুল হালিম বলে জানায় । সন্দিগ্ধ ব্যক্তির স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।