ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

হুজুর সেজে খুনিকে ধরলেন ওসি


১৬ মার্চ ২০২০ ১৮:৫৯

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ঘটনা পান ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা। হেলালের হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী উত্তমকে আটক করতে হুজুর সেজেছিলেন থানার ওসি মোখলেছুর রহমান। পুলিশ জানায়, মাত্র ২০ হাজার টাকার জন্য গত ১৮ জানুয়ারি ২০২০ সালে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের বল্বব গ্রামের বাসিন্দা পান ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে (৩৫) শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এদিকে নিহত হেলালের স্ত্রী মাজেদা খাতুন তার স্বামী নিখোঁজ মর্মে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির সূত্র ধরেই হেলাল হত্যাকান্ডে জড়িত ৯ জনকে আটক করতে সক্ষম হয় থানা পুলিশ।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান, জিডির সূত্র ধরে আক্কাস ওরফে আকাশ নামের একজনকে আটক করা হয়। আটক আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ১৮ জানুয়ারি হেলাল উদ্দিন পান বিক্রি করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার পর রাত দেড়টার দিকে হেলালের মুখ চাপা দিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় হত্যাকারীরা। এরপর পরিকল্পিতভাবে হেলালকে হত্যার পর লাশ একটি টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর ফেলে দেয়।

এরপর টয়লেটের ট্যাংক মাটিচাপা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে। গত ১৮ জানুয়ারি টয়লেটের ভেতর মাটিচাপা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৌশলে খুনের রহস্য উন্মোচন করা হয়।

ওসি জানান, আকাশকে আটকের পর তাকে কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ফারুক নামে জড়িত আরেক জনের নাম বলে দেয়। ফারুক জানায়, রিপন নামের আরেকজন জড়িত। রিপনকে আটক করে জ্ঞিাসাবাদ করা হলে সে জানায়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী উত্তম নামের একজন। সে সিলেটে অবস্থান করছে। ওসি মোখলেছুর রহমান বেশভূসায় হুজুর সেজে টিম নিয়ে সিলেটে অভিযান পরিচালনা করেন। ওসির সফল অভিযানে গ্রেফতার হয় উত্তম। গ্রেফতার উত্তম পুলিশের কাছে স্বীকার করে জানিয়েছে, এ হত্যাকান্ডে ফারুক, রুবেল, কাঞ্চন, আমিন, এনামুল, আকাশ, শামছুল, সোহেলসহ আরো অনেকেই জড়িত।

উত্তম জানিয়েছে, হত্যার আগে সে হেলালকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছিল। বাকীরা এসময় হেলালের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে রাখে। এরপর ধান ক্ষেতে নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এবং শ্বাসরোধে হেলালকে হত্যা করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিতের পর লাশ একটি টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর ফেলে দেয়। এরপর টয়লেটের ট্যাকের ভেতর মাটিচাপা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে। মৃত্যুর আগে হেলাল তাদেরকে বলেছিল যে, আমি তোমাদের চিনেছি, তোমরা কারা ? হত্যার ২১ দিন পার হলেও হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন, সাহসী ও দক্ষ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান। লেবাস বদল করে ফোর্স নিয়ে সক্ষম হন খুনিকে গ্রেফতার করতে।

নতুনসময়/আইকে