ঢাকা রবিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৫, ৮ই বৈশাখ ১৪৩২


নিজ মেয়েকে যৌনপল্লিতে বিক্রি, এরপর...


১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৩১

যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার ফুল মিয়ার মেয়ে সুফিয়া বেগমের সঙ্গে আসামি শরিফুলের বিয়ে হয় ১৫ বছর আগে। বিয়ের পর তাদের একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মেয়ের জন্মের এক বছর পর তাদের মধ্যে তালাক হয়ে যায়। এরপর থেকে সুফিয়া খাতুন মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান।

গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি শরিফুল মেয়েকে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নিজের কাছে নিয়ে যান। পরে আর ফেরত দেননি। অনেক খোঁজখবর করে মেয়ে ও শরিফুলকে কোথাও খুঁজে পাননি সুফিয়া। আট মাস পর বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডব্লিউএলএ) সহযোগিতায় ওই মেয়েকে ফরিদপুরের একটি যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয়। শরিফুল নিজের মেয়েকে গত বছরের ২২ মার্চ ওই যৌনপল্লিতে নিয়ে বিক্রি করে দেন। এ বিষয়ে শরিফুলকে আসামি করে মেয়ের নানা ফুল মিয়া বাঘারপাড়া থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা করেন।

জানতে চাইলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) ইদ্রিস আলী বলেন, বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নানাবাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে যান শরিফুল। পরে তাকে ফরিদপুরের একটি যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন। এরপর বিএনডব্লিউএলএর সহযোগিতায় পুলিশ ওই মেয়েটিকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় বাঘারপাড়া থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় শরিফুলকে আদালত সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। শরিফুল কারাগারে আটক। মেয়েটি বিএনডাব্লিউএলএর আশ্রয়ে রয়েছে।

বিএনডব্লিউএলএর যশোরের সমন্বয়কারী নাসিমা খাতুন বলেন, ‘অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। এরপর আমাদের শেল্টার হোমে রেখে তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। দেড় বছর ধরে মেয়েটি আমাদের আশ্রয়ে রয়েছে।’

উল্লেখ্য, মেয়েকে পাচার করে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে বাবার সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক অমিত কুমার দে এ আদেশ দেন। আসামির শরিফুল ইসলাম (৪৩) যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার মো. বাবুর ছেলে।

কেআই