সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মহিউদ্দিন সোহেলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্বারক লিপি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক একদল নেতা।
নিহত মহিউদ্দিন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মাহমুদ হাসান রিপন-মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন নেতৃত্বাধীন কমিটির উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক ছিলেন। এর আগে মহিউদ্দিন চট্রগ্রাম কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শতাধিক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এ মানববন্ধন করে।
মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমদি বাবলু বলেন, ছাত্রলীগ বিভিন্ন সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ দেশ আজকের এই অবস্থানে উন্নীত হয়েছে।ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতা কর্মীর রক্ত, শ্রম, ঘাম ও রাজপথের সাহসী প্রতিবাদ জড়িত রয়েছে। তার মধ্যেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সোহেল-এর মতো নেতৃত্বের অবদান রয়েছে। গত ৭ জানুয়ারী আমাদের রাজনৈতিক সহকর্মী মহিউদ্দিন সোহেলকে চট্টগ্রামের পাহারতলীতে তার ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক অফিসের সামনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
বাবলু বলেন, ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সোহেল-এর নিশৃংস হত্যাকারী সাবের সওদাগর ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
মানববন্ধন শেষে মহিউদ্দিন সোহেল-এর নিশৃংস হত্যাকারী সাবের সওদাগর ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইকবাল মাহমুদ বাবলু, শাহিনুর রহমান, সুজাদুর রহমান, সোহেল রানা মিঠু ও ডা. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, আইন মন্ত্রী ও পুলিশ প্রধান বরাবার স্বারক লিপি দেন।
স্বারক লিপিতে লিখেন, ২০০১ সালের জামায়াত-বিএনপি’র বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলনে চট্টগ্রামে এক সাহসী ছাত্রনেতার নাম ছিল মহিউদ্দিন সোহেল। ৭ জানুয়ারী আমাদের রাজনৈতিক সহকর্মী মহিউদ্দিন সোহেলকে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে তার ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক অফিসের সামনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।মহিউদ্দিন সোহেল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির প্রাক্তন সহ-সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রাক্তন উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সরকারী কমার্স কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, চট্টগ্রাম জেলা নেতা ছিলেন। তার বাবা ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তা। পাহাড়তলী সরকারী রেলওয়ে কলোনিতে তার জন্ম। পাহাড়তলী সরকারী কলোনী বাজারের কাছে তার লিজ করা জমিতে নির্মাণ করা অফিসে সে তার ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করত।মূলত পাহাড়তলী বাজার ও আশপাশের এলাকাকে সিসি ক্যামেরার আওতাধীন করার উদ্যোগ, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা করার ঘোষণা এবং এর কার্যক্রম শুরু, রাতের বেলায় পাম্প হাউস কলোনীর রাস্তাসমূহ আলোকিত করাসহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিশেষ করে বস্তিবাসীর জন্য ফ্রি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ফ্রি হেলথ ক্যাম্প, গ্রন্থাগার ও মিলনাতয়ন করার উদ্যোগ নেয়াই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।
একজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তার জন্য কি আমরা এতটুকু প্রত্যাশা করতে পারি না? একই সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করার পর চাঁদাবাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপপ্রয়াস চালনাকারী সাবের সওদাগর ও তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলুর সভাপতিত্বে ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান টুটুল, সাবেক সহ সভাপতি সুজাদুর রহমান, রফিকুল আলম গাফ্ফারী রাসেল,আমিনুল এহসান বাবু, মেহেরুল হাসান সোহেল, সৈয়দ আলাওল ইসলাম সৈকত, সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, জাফরুল শাহরিয়ার পলাশ,সোহান খান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, রিপন পোদ্দার, আ হ ম তারেক উদ্দিন, সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সোহেল রানা মিঠু, স্বাস্থ সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, সাবেক প্রচার সম্পাদক আরিফুল ইসলাম উজ্বল, উপ গণশিক্ষা সম্পাদক মফিজুল ইসলাম ঢালী, সহ সম্পাদক কামরুল হাসান মুরাদ, সদস্য মেহেদী হাসান, নুরুর রহমান মুকুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মোক্তাদিরুল ইসলাম মিল্টন, মেহেদী হাসান, গোলাম কিবরিয়া রাসেল মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।