কালীগঞ্জে গ্রেপ্তার ডাকাতের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) উপজেলার সিংদহ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে রক্ত মাখা একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। কুদ্দুস সিংদহ গ্রামের মৃত সবুর ম-লের ছেলে। তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শেখ সুজাত আলী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শেখ সুজাত আলী আরো জানান, গত ১২ নভেম্বর দিনগত রাতে উপজেলার চাপালী-শ্রীরামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আমজাদ আলী ও কমলাপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শহিদুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। ডাকাতরা চাপালী-শ্রীরামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আমজাদ আলীর বাড়ির সকলকে জিম্মি করে নগদ টাকা, ৫টি মোবাইল ফোন, ১টি সোনার চেইনসহ ৮৮ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আমজাদ আলী, ছেলে আজাদ, স্ত্রী মনোয়ারা বেগম কে কুপিয়ে মারাত্বক যখম করে। সে সময় তার পুত্র বধু জান্নাতুল ফেরদৌস কে ডাকাতরা লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে যখম করে। এ ঘটনায় ১৪ নভেম্বর বিজিবি সদস্য আমজাদ আলীর ছেলে আজাদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৮/১০ জন ডাকাতকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি ডাকাতির মামলা করেন।
অপরদিকে কমলাপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শহিদুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তা সুজাত আলী আরো বলেন, ডাকাতরা যখন আজাদ কে বেঁধে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রেখেছিল সে সময় আজাদ হাত খুলে ফেলে ওই অস্ত্র দিয়ে এক ডাকাতকে কুপিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। সে সময় ডাকাতরা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।
ডাকাতির পর থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে আব্দুল কুদ্দুসকে একটি রক্ত মাখা মোবাইল ফোনসহ গ্রেপ্তার করে। এছাড়া একই দিন সন্দেহজনকভাবে শ্রীরামপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আব্দুল মোমিনকে আটক করে। এ দু’জনকে গ্রেপ্তার ও আটকের পর পুলিশ মামলা তদন্তের স্বার্থে ডাকাতির বিষয়ে কোন মুখ খোলেনি। এদের মধ্যে আব্দুল কুদ্দুসের কাছ থেকে একটি রক্তমাখা মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যজনকে গোপন স্থানে আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানাগেছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) ইউনুচ আলী ডাকাতির বিষয়ে প্রথমে কোন কথা বলতে না চাইলেও পরে ঘটনার সাথে জড়িত কুদ্দুস নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে স্বীকার করেন।
প্রসঙ্গত গত ১৩ নভেম্বর দিবাগত রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী-শ্রীরামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আমজাদ আলী ও কমলাপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শহিদুল ইসলামের বাড়িতে একদল ডাকাত ডাকাতি করে। তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাপালী শ্রীরামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য আমজাদ আলী তার ছেলে আজাদ, স্ত্রী মা মনোয়ারা বেগম ও পুত্র বধু জান্নাতুল ফেরদৌসকে কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে নগদ টাকা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকারসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। একই রাতে ডাকাতরা কুয়েত প্রবাসী শহিদুল ইসলামের বাড়িতেও ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষে ডাকাতরা গান্না সড়কের সিংদহ বেলতলা মাঠের মধ্যে ৩টি বোমা, ১টি গামছা, ১টি লুঙ্গি, ১টি হাসুয়াসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু জিনিসপত্র ফেলে রেখে যায়।
এমএ