ঢাকা বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


বাকৃবিতে ওরা এখন ছাত্রলীগ


৪ নভেম্বর ২০১৮ ২০:১৩

ছবি- ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক -মোঃ মাহবুবুর রহমান অপু,একসময় ছিলেন ছাত্রদলের স্বক্রিয় কর্মী। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের বিক্ষোভে হাতেগুনা যে ক'জন ছাত্রদল কর্মী বাকৃবীতে স্বক্রিয় ছিলেন অপু তাদের একজন। ছাত্রদলের ব্যানারে অপুর সে ছবি সামাজিক যোগাযোগ ভাইরাল হয়।

বাকৃবি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রুহুল আমিনের অনুসারি অপু সময়ের পালাবদলে ইউনিট ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেলের হাত ধরে ভাগিয়ে নেন সম্পাদক পদ।

অপুর মত এমন আরও ১২-১৫ জন অনুপ্রবেশকারী ছাত্রলীগের এ গুরুত্বপূর্ন ইউনিটে পদ পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী।

ইউনিটের শীর্ষ দুই নেতার সীমাহীন দুর্নীতি, তদবির বাণিজ্য এবং কমিটিতে ছাত্রদল, শিবির নেতাকর্মীদের অনুপ্রবেশ করার সুযোগ দেয়ার অপরাধে অভিযুক্ত মেয়াদোত্তীর্ণ বির্তকিত এই বাকৃবি ছাত্রলীগের কমিটি।

যদিও পারিবারিক রাজনৈতিক মতাদর্শ দেখে ছাত্রলীগে পদ দেওয়ার ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি সবুজ কাজী এবং সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ রুবেল মিলে কমিটিতে নিজেদের ইচ্ছে মতো ছাত্রদল ও শিবির কর্মীদের প্রবেশ করার সুযোগ দিয়েছেন। মোঃ মাহবুবুর রহমান অপুর মত ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক- হাফসা জাহান হিয়ার বিরুদ্ধে। হিয়ার বাবা জামায়াতের রাজনীতির সাথে এখনো সক্রিয়ভাবে জড়িত।শুধুমাত্র শিক্ষক বানাবে বিনিময়ে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পদ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে খোদ ছাত্রলীগের ভেতর থেকেই।

বাকৃবি ছাত্রলীগের সহ সভাপতি -আফিফাত খানম রিতিকা,তার মা পঞ্চগড় মহিলা বিএনপির সভাপতি,তাকেও শিক্ষক বানানোর টোপ ফেলে টাকার বিনিময়ে পদ দেওয়া হয়। সহ-সভাপতি-তানিয়া আফরিন সিনথী, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমের দিকে ছাত্রলীগ বিরোধী বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত ছিল। তার রেজাল্ট ভালো থাকায় তাকেও মোটা অংকের বিনিময়ে পদ প্রদান করা হয়। সম্প্রতি তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে বাকৃবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এম আনোয়ারুল হক বলেন, বর্তমান সভাপতি-সাধারন সম্পাদকের অনুসারি হওয়ায় জামাত-বিএনপি ঘরানার সমর্থক অনেককেই পদ দেওয়ায় হয়েছে। শীর্ষ দুই নেতার স্বার্থ হাসিলে পুরো কমিটি বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছে। আমরাও বিব্রত।

সহ-সভাপতি আনিসুজ্জামান জনি বলেন, ত্যাগীরা পদ না পেয়ে অপুর মত বিএনপি-জামাতের অনেকেই পদ পেয়েছে। এটা অদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক। একারনে আমরা যারা বর্তমান কমিটিতে আছে তারাও এক ধরনের অস্বস্তির মধ্যে আছি।

যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক নূর-এ আলম তপন বলেন, অপু ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন,এটা ক্যাম্পাসের সবাই জানে। অভিযুক্ত অন্যদের জামাত-বিএনপির সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে ইতোমধ্যে অনেক গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এদের কারনে আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছি।

অভিযোগের ব্যাপারে বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, "ঢালও অভিযোগের ব্যাপারটি সত্য নয়। অপুর ছবি এডিট করে একটি পক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। রিতিকা বা অন্যদের পরিবারের সদস্যরা জামাত-বিএনপির রাজনীতি করলে কি তাদের সন্তানরা ছাত্রলীগ করতে পারবে না?"

একই দাবি করে সাধারন সম্পাদক বলেন, "আপনি আমাকে আপনার ছবি দেন, দিয়ে বলেন কোন জায়গায় এডিট করে লাগাতে হবে। পরিবার কোন সদস্য কি রাজনীতি করলো সেটা দেখার বিষয় নয়, কমিটির সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাস করে রাজনীতি করে।"

আরকেএইচ