ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


পরিবহণ ধর্মঘটে রাজশাহীতে চরম দূর্ভোগে যাত্রীরা


৩০ অক্টোবর ২০১৮ ০১:০৭

সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা পরিবর্তনের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার দ্বিতীয় দিনে পরিবহণ কর্মবিরতি চলছে রাজশাহীতেও। এই কর্মসূচিতে রাস্তায় বেরিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। যদিও পরিবহণ শ্রমিকরা দাবি করছে ঘোষিত কর্মসূচি ধর্মঘট। ধর্মঘটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো দূরপাল্লার বাস। বন্ধ রয়েছে আন্তজেলা রুটের বাসও। এতে সড়ক পথে বিভাগীয় শহর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

গতকাল সেমাবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া পরিবহন শ্রমিকদের বাস স্ট্যান্ডে অবস্থান করতে দেখা গেছে। ৪৮ ঘন্ট ধর্মঘটের প্রথম দিন গত রোববার শহরের কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। নগরীর নওদাপাড়া আমচত্বর এলাকায় আমান জুট মিলের শ্রমিকদের একটি বাস থামিয়ে ভাঙচুর করা হয়। পরিবহণ শ্রমিকরা এসময় বাসের ড্রাইভার রিপনকে বাস থেকে নামিয়ে মারধর করে।

এছাড়া নগরীর শিরোইল স্ট্যান্ড এলাকায়, নওগাঁ সড়ক, কাশিয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় ধর্মঘটের পক্ষে তৎপর ছিলো পরিবহণ শ্রমিকরা। বাস বন্ধ থাকলেও নগরীতে অটোরিকশাসহ অন্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। তবে বাস বন্ধ থাকায় অটোরিকশার চালকরা বেশি ভাড়া নিচ্ছে এমন অভিযোগ তুলেছে যাত্রীরা। স্থানীয় পরিবহণ নেতারা জানান, সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া ধর্মঘটের সঙ্গে তারা একাত্মতা প্রকাশ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। ৪৮ ঘণ্টা এ ধর্মঘট চলবে। সকাল থেকে শুরু হওয়া পরিবহণ ধর্মঘটের প্রথম দিনেই অচল হয়ে পড়েছে রাজশাহী।
দূর-দূরান্তে নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েও যানবাহন না পেয়ে পথে পথে যাত্রীদের নানান হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, ঢাকা বাস টার্মিনাল ও নওদাপাড়া বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৬টার পর কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশে নগরীর শিরোইল, ভদ্রা ও রেলগেট বাসস্ট্যান্ডে সাধারণ যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে।

বাস না পেয়ে বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে রওনা হচ্ছেন অনেকেই। অনেককে আবার রাজশাহী রেলস্টেশনে ভিড় করতে দেখা গেছে। ধর্মঘটের ফলে চাপ পড়েছে ট্রেনে। তবে সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় গত রোববার সকালে রাজশাহী থেকে ঢাকার কোনো আন্তনগর ট্রেন নেই। এতে আরও দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানী-মুখি যাত্রীরা। তবে অন্যান্য রুটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় সিট না পেলেও স্ট্যান্ডবাই টিকেট নিয়ে রওনা দিচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।

এছাড়া রাজশাহী থেকে রংপুর, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস চলাচল করায় ভুক্তভোগীরা নগরীর কুমারপাড়া ডিপো ও রেলগেট বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছেন। তবে সব সময় বিআরটিসির বাস না থাকায় এবং বিআরটিসির বাস কম থাকায় দুর্ভোগ কাটছে না। ফলে মাইক্রোবাস, সিএনজি ও দূরের যাত্রার জন্য রেলপথকেই বেছে নিচ্ছেন অনেকে। রাসেল চারঘাট থেকে বানেশ্বরে এসেছেন সে জানান, আমার নারায়নগঞ্জ যাওয়া খুব জরুরী। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে কোন গাড়ী পাচ্ছিনা। যেতে না পারলে চাকরির ক্ষতি হয়ে যাবে। পরিবহন শ্রমিকরা কথায় কথায় ধর্মঘট ডাকে। আইনি বিষয় আইনের মাধ্যমেই মোকাবেলা করা উচিত। মানুষকে এভাবে জিম্মি করা ঠিক নয়। রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন রবি জানান, রোববার সকাল থেকে দেশব্যাপি ৪৮ ঘণ্টার পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। মালিক সমিতি এবং মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন ও ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নসহ শ্রমিক সংগঠনগুলোর সিদ্ধান্তে রাজশাহীতেও এই ধর্মঘট চলছে বলেও জানান তিনি।