স্বাধীনতার ৫১ বছরেও সাঁকোয়া বধ্যভূমিতে নির্মাণ হয়নি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার একটি গ্রাম সাঁকোয়া। সাঁকোয়া শুধু একটি গ্রামই নয়, রাজশাহী তথা দেশের অন্যতম বধ্যভূমি। পুরো গ্রামে একাত্তরে যে নৃশংস বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরেরা, তা কল্পনাকেও হার মানায়। সারা দেশের মতো ১৯৭১ সালে মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি যুদ্ধ হলেও এ গ্রামের মতো এত মানুষের আত্মাহুতি দিতে হয়নি কোথাও। এখানে পাকিস্তানি হানাদারদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে শতাধিক মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে এটি দুই শতাধিক বলে মনে করেন। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর (সুবর্ণজয়ন্তী) পার হয়ে গেলেও এ গ্রামে শহীদদের স্মরণে এখনো নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিফলক কিংবা স্মৃতিস্তম্ভ। এটি সংরক্ষণে সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণের করার জোড় দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মোহনপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ড বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের দেশজুড়ে চলছে যুদ্ধের দামামা। পাকিস্তানি হানাবাহিনীরা সাঁকোয়া গ্রামে ক্যাম্প তৈরি করে উপজেলার সাধারণ মানুষদের ধরে এনে নির্যাতনের পর হত্যা করে গণকবর দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় বীরমুক্তযোদ্ধাদের সহযোগিতার মোহনপুর উপজেলা বাসি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নেন যুদ্ধের। দীর্ঘ নয় মাস যোদ্ধের পর স্বাধীন হয় দেশ। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও অযত্ন আর অবহেলায় সাঁকোয়া গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত এই বধ্যভূমিটি। শহীদদের স্মরণে এখনো নির্মিত হয়নি কোনো স্মৃতিফলক কিংবা স্মৃতিস্তম্ভ। ঝোঁপ-ঝাঁড় আবার কখনো গরু ছাগল বিচরণ করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবিহা ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, জায়গার সমস্যার কারণে বধ্যভূমি নির্মাণ করা সম্ভব হয়। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের আবেদন করার পর সেটি অনুমোদন করা হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ হলেও বধ্যভূমি, স্মৃতিফলক ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে।