ঢাকা বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১০ই বৈশাখ ১৪৩২


বরগুনায় কুমির প্রজনন কেন্দ্রে ১০ বছরেও বৃদ্ধি পায়নি কুমিরের সংখ্যা


২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০১:৫৭

বরগুনার তালতলীর টেংরাগিরি ইকোপার্কে কুমির প্রজনন কেন্দ্র স্থাপনের ১০ বছর পার হলেও বৃদ্ধি পায়নি কুমিরের সংখ্যা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার অভাবে বাঁচানো যায়নি ডিম ফুটে বের হওয়া কুমিরের বাচ্চাগুলোকে। যদিও বন বিভাগের দাবি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল এর অভাবে তারা কুমিরের বাচ্চা বাঁচাতে পারছেনা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১২ সালে টেংরাগিরি ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হয়। তখন পার্কের মধ্যে দুটি কুমির নিয়ে স্থাপন করা হয় কুমির প্রজনন কেন্দ্র। টেংরাগিরি বনের নামে পুরুষ কুমিরটির নাম রাখা হয় 'টেংরা' এবং ছকিনা গ্রামের পাশে এই বনাঞ্চল হাওয়ায় স্ত্রী কুমিরটির নাম রাখা হয় 'ছকিনা'। প্রজনন কেন্দ্র স্থাপনের ১০ বছরের অধিক পার হলেও এখন পর্যন্ত কোন কুমিরের বাচ্চা বাঁচাতে পারেনি প্রজনন কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, প্রতিবছর কুমির ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। কিন্তু বন বিভাগের লোকজন কুমিরের বাচ্চা গুলোকে সঠিকভাবে লালন-পালন না করায় এখন পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। কুমিরের বাচ্চা গুলো বড় করতে পারলে রপ্তানি করে সরকার আয় করতে পারত। পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা যেত।

যদিও বন বিভাগের দাবি, ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর পরে বাচ্চাগুলোকে উদ্ধার করে আলাদা স্থানে রাখতে হয়। কিন্তু বাচ্চা গুলোকে সংগ্রহ করে আলাদা স্থানে নিয়ে যাওয়ার মত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল বরগুনা বন বিভাগের নেই। তাই তারা এই দীর্ঘ ১০ বছরে কোন বাচ্চা বাঁচাতে পারেনি।

সোনাকাটা এলাকার রাজু, হাসান, মেহেদীসহ একাধিক বাসিন্দারা বলেন , তালতলী বন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আন্তরিকতার অভাবে ও উদাসীনতার কারণে তারা ১০ বছরেও কোন কুমিরের বাচ্চা বাঁচাতে পারেনি।

ছকিনা এলাকার কে এম রিয়াজুল ইসলাম বলেন, প্রজনন কেন্দ্রের কুমির দুটোকে ঠিকমতো খাবার দেয়া হয় না। ৩-৪ দিন পর পর দুইটা ব্রয়লার মুরগি খেতে দেয়া হয়। যা খেয়ে ওই কুমির দুটির কোন মতে বেঁচে আছে।

তিনি আরো বলেন, কুমির দুটোকে আটকে রেখে না খাইয়ে রাখা অত্যন্ত অমানবিক। তারা যদি ঠিকঠাক মত খাবার দিতে না পারে তাহলে কুমির দুটোকে সুন্দরবনে ছেড়ে দিক।

বন বিভাগের তালতলী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রজনন কেন্দ্রে বাচ্চা দেয়ার পরে পুরুষ কুমিটা বাচ্চাগুলো খেয়ে ফেলে। কিন্তু বাচ্চাগুলো সংগ্রহ করে নার্সিং করার জন্য যে ধরনের প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল দরকার তা আমাদের নেই। তাই বাচ্চাগুলো বাঁচাতে পারছি না।

তিনি আরো বলেন, কুমিরের বাচ্চা নার্সিং করার জন্য দক্ষ জনবল চেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি প্রদান করব।

কুমিরকে নিয়মিত খাবার দেওয়া হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, কুমিরকে নিয়মিত খাবার দেয়া হয়। নিয়মিত খাবার না দিলে কুমিরগুলো দশ বছর বাঁচিয়ে রাখা যেত না।