ঢাকা বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২


কলেজছাত্রকে আটকে নকল হিজড়ার কাণ্ড!


১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:২৫

রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (১৬)। গত ২৩ জানুয়ারি বিকেলে ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় হিজড়ার খপ্পরে পড়েন। পরে ওই হিজড়াসহ আরও কয়েকজন তাকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মেসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একজন পতিতার সাথে ছবি তুলে তার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। পরে তিনি থানা পুলিশের আশ্রয় নেন। অবশেষে ওই হিজড়াসহ মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ।

শনিবার (১৮ ফেব্রুযারি) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তরিকুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গত ২৩ জানুয়ারি বিকেল সোয়া ৩টার দিকে কলেজ থেকে ভিকটিম মো. সাইফুল ইসলাম বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু যাত্রাবাড়ী থানার চৌরাস্তা মোড় সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বের কাছাকাছি পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন পুরুষ এবং তাদের সাথে থাকা একজন হিজড়া তার পথরোধ করে। পরে চেতনানাশক ওষুধ/দ্রব্যাদি প্রয়োগ করে অচেতন করে তাকে কৌশলে একটি মেসের কক্ষে নিয়ে বন্দী করে রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর হিজড়া লোকটি একজন পতিতাসহ সেই কক্ষে প্রবেশ করে ভিকটিমকে উলঙ্গ হতে বলে। ভিকটিম রাজি না হলে হিজড়ার সাঙ্গপাঙ্গরা সেই কক্ষে প্রবেশ করে ভিকটিমকে বেধড়ক মারপিট করে এবং পতিতার সাথে উলঙ্গ ছবি তুলতে বাধ্য করে।

উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তরিকুর রহমান জানান, তারা ভিকটিমের সাথে থাকা নগদ এক লাখ ৬৬ হাজার টাকা ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং আরও টাকা দাবি করে। অন্যথায় মোবাইল ফোনে তোলা উলঙ্গ ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এতে ভিকটিম ভীত হয়ে তার আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে আরও নগদ ২৪ হাজার টাকা বিকাশ করে দেয়। পরে ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মামলা নং-৩৫। ওই মামলার ছায়া তদন্ত শেষে জড়িত আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন মো. সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি (৩২), মো. নাছির (৪২), মো. আমানুর মন্ডল (৪২), মো. রাজু (২৬), মো. আব্দুর রহমান (৩৬) ও মো. হৃদয় মিয়া (২২)। তাদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী মো. সোহাগ মিয়া ওরফে স্বজন ওরফে কাজল ওরফে হিজড়া সজনি। মূলত নকল হিজড়া সেজে দীর্ঘদিন থেকে এই চক্রের সদস্যরা কৌশলে অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান গোয়েন্দা পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

ডিবির এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, রাজধানীতে ৯০ শতাংশই নকল তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন। শুধু রাস্তায় বা বাসায় চাঁদাবাজি নয়, অপহরণের মাধ্যমেও এই চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমনকি চাঁদাবাজির টাকা চড়া সুদে ঋণ দেওয়ারও প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

আইকে