ঢাকা বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২


সাবেক স্ত্রী’র অত্যাচারে সড়কে বসবাস যুবকের


২০ জানুয়ারী ২০২৩ ০৮:৫৯

সাবেক স্ত্রী সাবনুর আক্তার ও তার পরিবারের দেয়া মিথ্যা মামলা, হামলা ও বিভিন্ন অত্যাচারের কারণে ৪ মাস ধরে সড়কে বসবাস করছেন রাজধানীর পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের বাসিন্দা হাসান। ২০২১ সালের ২১ মে সেকশন-১০, ব্লক-এ, বিহারিদের মুসলিম ক্যাম্পের বাসিন্দা আমানের মেয়ে সাবনুরের সাথে বিয়ে করেন হাসান। এরপর স্ত্রী সাবনুরের কথা অনুযায়ী একসাথে বসবাসের জন্য তাদের বাড়ি চতুর্থ তলা ভবন নির্মাণের জন্য কয়েক ধাপে প্রায় ৪ লাখ টাকা দেন তিনি। বেশকিছুদিন তার টাকায় নির্মিত বাড়িতে সাবনুরের সাথে সংসারও করেন হাসান। এরপর স্ত্রী সাবনুর মুঠোফোনে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অন্য ছেলেদের সাথে কথা বলা শুরু করে। বিষয়টি জানতে পারলে স্ত্রীকে সতর্ক করেন হাসান। এতেই বাধে বিপত্তি। ক্ষিপ্ত হয়ে হাসানের টাকায় বানানো বাড়ি থেকেই তাকে বের করে তার সাবেক স্ত্রী সাবনুর ও তার পরিবার। অবশেষে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে সালিশের মাধ্যমে হাসান ও সাবনুরের খোলা তালাক হয়। এরপর আবারো হাসানের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় চুরির মামলা দায়ের করে সাবনুর। হাসানের অভিযোগ, কোনো তদন্ত ছাড়াই সেই মামলা গ্রহণ করে পল্লবী থানা। মাঝেমধ্যেই এসব মিথ্যা অভিযোগের কারণে হাসানের বাসায় পুলিশ আসে। স্থানীয় প্রভাবশালীরাও হুমকি-ধামকি দেয়। এক মাধ্যমে সাবেক স্বামী হাসানের কাছে বার্তা পাঠান সাবনুর। বলেন ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে চাইলে দিতে হবে ১০ লাখ টাকা। এসব ঘটনার পর হাসান জানতে পারেন এ পর্যন্ত ৩ টি বিয়ে করেছেন তার সাবেক স্ত্রী। এরমধ্যে একজন বিচ্ছেদের কিছুদিন পর আত্মহত্যাও করেছেন।


ভুক্তভোগী হাসান জানান, গত বছরের ১১ নভেম্বর পল্লবী থানায় আমার বিরুদ্ধে একটি জিডি করে সাবনুর। এরপর ৪ ডিসেম্বর সর্বসম্মতিতে তাকে খোলা তালাক দেই। ওইদিনই তার হাতে দেনমোহরের ১ লাখ টাকা তুলে দেই। কিন্তু অর্থের লোভে তারা আমাকে হয়রানি করছে। গত বছরের ২০ ডিসেম্বর সাবনুর তার বাসায় চুরির নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় মিথ্যা মামলা করেছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিয়া উদ্দীন কোনো তদন্ত না করেই আমার বিরুদ্ধে মামলাটি গ্রহণ করেছেন। পরে আমি আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসলে মামলার ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে কল করে সতর্ক করেন। বলেন, আমি যেন সাবনুর বা তার পরিবারকে ডিস্টার্ব না করি। অথচ আমি জামিন নেয়ার আগে বা পরে সাবনুর বা তার পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের সাথে কোনো যোগাযোগ করিনি।


তিনি অভিযোগ করে বলেন, টাকা দিয়ে আপোষ না করলে আবারো আমাকে মিথ্যা মামলা দিবে, আমার ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি আমার বাসায় থাকতে পারছি না। ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারছি না। এ বিষয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, পুলিশ কমিশনার ও মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন বলেও জানান হাসান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসানের বিরুদ্ধে দায়ের করা চুরি সংক্রান্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জিয়া উদ্দীন বলেন, চুরির সত্যতা পাওয়ার কারণে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে হাসানের সব অভিযোগ অস্বীকার করে তার সাবেক স্ত্রী সাবনুর বলেন, আমি তার নির্যাতন সইতে না পেরে তাকে তালাক দিয়েছি। আমি তার কাছ থেকে বাড়ি বানানোর জন্য কোনো টাকা নেইনি। উল্টো সে টাকার জন্য আমাদের ওপর অত্যাচার করছে।

অপরদিকে স্থানীয়রা বলছেন হাসান একজন ব্যবসায়ী ছেলে। তার টাকা দিয়ে সাবনুর ও পরিবার বাড়ি বানিয়েছে। সাবনুরের একাধিক বিয়েও রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।