ঢাকা মঙ্গলবার, ২২শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


পরকীয়ায় দেবর-ভাবী, দেখে ফেলায় এ কী তাজ্জব কাণ্ড


১৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৩০

রেহেনা বেগম। স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে দেবরের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেই দৃশ্য দেখে ফেলে পাশের বাড়ির আত্মীয় আরশ আলী। পরে আরশ আলীর সঙ্গেও পরকীয়ায় লিপ্ত হয় রেহেনা।এমনই এক তাজ্জব কাণ্ড ঘটে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের রহিমপুর পূর্বপাড়া গ্রামে। তবে এখানেই ঘটনা থমকে দাড়ায়নি গতি উল্টো দিকে মোড় নিয়েছে।

আরশ আলীর সঙ্গেও পরকীয়ায় লিপ্ত হওয়ার ঘটনা চোখে পরে রেহেনার জা চম্পা বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রেহেনা ও আরশ আলী মিলে চম্পার ঘরে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ঘরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান চম্পা। লোমহর্ষক ওই ঘটনা এমনভাবেই আদালতে বর্ণনা দেন ঘাতক আরশ আলী।

ঘটনার পর সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয় রেহেনাকে। আর ৯ অক্টোবর রেহেনার পরকীয়া প্রেমিক গ্রামের মৃত হুছন আলীর ছেলে আরশ আলী (৪৫)কে আটক করে পুলিশ। আটকের পরদিন সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাকন দে’র কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আরশ আলী।

আরশ আলী স্বীকারোক্তিতে জানা যায, তার খালাতো ভাই উমান প্রবাসী। তার স্ত্রী রেহেনা বেগম (২৫) থাকে দেশে। তখন সে দেখতে পায় রেহেনার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে তার দেবর কয়েছের সঙ্গে। আরশ আলী রেহেনা ও কয়েছকে অনৈতিক কার্যকলাপে সরাসরি ধরে ফেলে। এ বিষয়ে রেহেনা আরশ আলীকে চুপ থাকতে বলে এবং আরশ আলীর সঙ্গেও পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। তাদের মধ্যে ১৫/১৬ বার শারীরিক সম্পর্ক হয়। এ সম্পর্ক রেহেনার ভাবি চম্পা বেগম ও তার ছেলে ইমরান দেখে ফেলে। রেহেনার স্বামী দেশে আসলে এ বিষয়ে ঝগড়া হয়। প্রায় সময় রেহেনার সঙ্গে ঝগড়া হলে চম্পা বেগম হুমকি দিতো পরকীয়া প্রেমের ব্যাপারে। রেহেনা ও আরশ আলী মিলে চম্পা বেগমকে ভয় দেখানোর জন্য পরিকল্পনা করে। ফলে কামাল বাজারের হুশিয়ার আলীর দোকান থেকে একশ’ টাকা দিয়ে দুই লিটার পেট্রোল ক্রয় করে আনে। পেট্রোল রেহেনা তার ঘরে লুকিয়ে রাখে। আর বলে রাত ৯টায় রেহেনার কাছে যাওয়ার কথা। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে রেহেনার ঘরের দরজায় গিয়ে টোকা দেয় আরশ আলী।

রেহেনা ঘুম থেকে উঠে এবং দুইজন মিলে চম্পা বেগমের ঘরের মূল দরজায় পেট্রোল ঢালে এবং আরশ আলী দূর থেকে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন লাগায়। আগুন দেখে রেহেনা দৌড়ে ঘরে ঢুকে। আর আরশ আলী তার বাড়িতে যায়। কিছুক্ষণ পর আরশ আলী লোকজনের আর্তচিৎকার শুনে। মানুষ জনের সঙ্গে সেও আগুন নেভাতে যায়। গিয়ে দেখে চম্পা বেগম ও তার ছেলেমেয়ে সহ ছয় জন আগুনে পুড়ে গেছে। এলাকার লোকজন তাদের ঘর থেকে বের করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। পরবর্তীতে আরশ আলী আত্মগোপনে চলে যায় এবং পালিয়ে গিয়ে গৃহস্থ কাজ করে। গত ৯ই অক্টোবর আরশ আলীর বোন জামাই তাকে ফোন করে আসতে বললে, সে সিলেটের হুমায়ুন রশিদ চত্বরে আসে। সেখানে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। আরশ আলী তার জবানবন্দিতে বলে সে আর রেহেনা মিলে অন্যায় কাজ করেছে এবং ক্ষমা চায়।

বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দোহা, পিপিএম বলেন, ইতিমধ্যে বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর সকল ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতিপূর্বের এই ঘটনারও রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে পুলিশ।

আরআইএস