২ চেয়ারম্যানের যাতাঁকলে পিষ্ঠ সদস্যরা

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার পল্লী উন্নয়ন বোর্ড’র কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান পদ দখল করতে সাবেক ও বর্তমান ২ চেয়ারম্যানের যাতাঁকলে পিষ্ঠ হয়ে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হওয়া সহ মূলধনের হিসাব না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন এম মাকসুদুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে। সমিতির শেয়ার মুলধন ৩৬ লক্ষ টাকা হলেও কাগজ পত্রে ১৬ লক্ষ টাকা দেখানো হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসে মাঠ পর্যায়ে ২১০ টি সমিতির নিবন্ধন থাকলেও উপজেলা কেন্দ্রীয় সমিতি ( ইউসিসিএ লি:) নির্বাচনে মাত্র ১১১টি সমিতির থেকে ভোটার নির্ধারণ করে ভোট সম্পন্ন করে এম মাকসুদুর রহমান মিজান জয়ী হন। তিনি জয়ী হওয়ার জন্য তাকে ভোট দিবেনা সন্দেহে ২১০টি নিবন্ধনকৃত সমিতি থেকে মাত্র ৬১ জনকে ভোটার করেন। অপরদিকে জাফর উল্লাহ বাবুল ৫০ জনকে ভোটার করে নির্বাচন সম্পন্ন করেন। নির্বাচনে সাবেক চেয়ারম্যান জাফর উল্লাহ বাবুলকে সমর্থন করতে পারে এমন আশংকায় বাকী সমিতির সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন এমন কি ২০১৯ সালে নেয়া লোনের টাকা পরিশোধ হওয়া সত্বেও সমিতির হিসাব দিচ্ছে না সদস্যদেরকে। দীর্ঘদিন সমিতিতে লোন চেয়ে ধর্না দিলেও মন গলেনি বর্তমান চেয়ারম্যানের। হিসাব না পেয়ে ৮ নং আসলামপুর কৃষক সমবায় সমিতি,৪ নং মধ্য চর নাজিমউদ্দিন কৃষক সমিতি, ৬নং হাজারী গঞ্জ উজালা সমিতি, জাহানপুর বিল্পব সমবায় সমিতি, ১০ নং জাহানপুর কৃষক সমবায় সমিতি, ৮নং আসলামপুর জনতা কৃষক সমবায় সমিতি,আসলামপুর সবুজ কৃষক সমবায় সমিতির ম্যানেজারের পক্ষে মো. ফারুক বাদী হয়ে মুলধনের হিসাব চেয়ে ২৫ ডিসেম্বর ২২ আরডিও বরাবর আবেদন করেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পরিদর্শক মাহজুর রহমানের শ্বশুড় একটি সমিতি ম্যানেজার ও লোন গ্রহিতা হওয়া সত্বেও তিনি তার সমিতির নাম, অবস্থান, সদস্য সংখ্যা বলতে পারেন না। ৮ মার্চ ২১সালে ৪ নং মধ্য চর নাজিমউদ্দিন কৃষক সমবায় সমিতি লিমিটেড’র লোন ১০০% আদায় প্রত্যায়ন দেন আরডিও এইচ,এম, সুমন কিন্তু একই বছর ৯ সেপ্টেম্বর ঐ সমিতির লোনের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে জাফর উল্লাহ বাবুলকে সমর্থন করার অজুহাতে পরিদর্শক মো. ইলিয়াসকে লোন আদায় কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেন। ২১ সালের ৮ জুলাই ইলিয়াস সমিতির কাগজ পত্র প্রমানদি নিয়ে অফিসে যাওয়ার সময় বর্তমান চেয়ারম্যানের মামাতো ভাই সাজ্জাদ হোসেন মিশূ তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেল, নগদ টাকা, কাগজ পত্র বিআরডিবির মোড়ে দাড়িয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আদালতে সিআর নং ৪৬৭/২১ চলমান রয়েছে।
ইলিয়াস অভিযোগ করেন, আমি অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করলেও তার মাস্তান বাহিনী বারবার হামলা চালিয়ে আহত করে।
সাবেক চেয়ারম্যান জাফর উল্লাহ বাবূল লিখিত ভাবে অডিট প্রতিনিধি দলের কাছে জানান, তিনি বিদায়ীকালীন সমিতির সদস্যদের ৩৬ লক্ষ টাকা জমা ছিল। বিআরডিবির ২টি পুকুর বাৎসরিক ২১ হাজার টাকা মিজানের সমিতি’র সদস্যর নামে লিজ দেখিয়ে নিজেই ভোগ দখলে রেখেছেন। এমনকি লিজের টাকাও জমা দেননি।
এ বিষয়ে এম মাকসুদুর রহমান মিজানের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, ২১ সাল পযর্ন্ত পুকুর লিজের টাকা আমার কাছে ছিল । আমি জমা দিয়েছি। ৩৬ লক্ষ টাকা সদস্যদের শেয়ার মুলধন বিষয়ে বলেন, আমি কোন খাতা পত্র পাইনি ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাচ্ছি।
২১০ টি নিবন্ধনকৃত সমিতির মধ্যে বাকী সমিতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি জানান, নিস্কিয় সমিতি গুলো ১৪ জানুয়ারী এজিএম এ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সঞ্চয় টাকার হিসাব না পাওয়া এবং ইলিয়াসকে অব্যাহতি প্রদান সর্ম্পকে আরডিও সুমন বলেন, কোন সদস্য আমাদের কাছে আসেনি। ইলিয়াসের অব্যাহতি বৈধ বলে দাবী করেন তিনি।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, চেয়ারম্যান এম মাকসুদুর রহমান মিজানের বাড়ী পৌর সভার ৬ নং ওয়ার্ডে হলেও তিনি কেরামত গঞ্জ কৃষক সমবায় সমিতির সদস্য হয়ে চেয়ারম্যান হয়েছেন।
২০২১ সালের অডিট রিপোট অনুযায়ী বিআরডিবির ৪একর ২৮ শতাংশ জমির মূল্য ছিল ১৬ লক্ষ ৭১ হাজার ৫ শত ৯৪ টাকা দেখানো হয়েছে। শেয়ার মূলধন ১৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৯ শত ৪০ টাকা । সঞ্চয় আমানত ১৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬শত ৮৭ টাকার হিসাবের খতিয়ান হালনাগাদ লিপিবদ্ধ ছিল না।