ঢাকা বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২


বিজয় দিবসে কনডম দিয়ে হাসপাতালের সাজসজ্জা, তদন্তে কমিটি


১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৩৬

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের সাজসজ্জায় বেলুনের বদলে ব্যবহার করা হয় কনডম। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচিত হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ ঘটনায় গতকাল শনিবার প্রতিষ্ঠানের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ব্রাদার রেজাউলকে দায়িত্ব থেকে ইতোমধ্যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও গঠিত হয়েছে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।

জানা গেছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কক্ষ, করিডর, বারান্দায় সৌন্দর্য বৃদ্ধির নির্দেশ দেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস সোবাহান। কথা ছিল হাসপাতালের প্রধান ফটক ও জরুরি বিভাগের পুরো কক্ষে ফুল ও বেলুন দিয়ে সাজানো হবে। কিন্তু হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে হাতে গোনা কয়েকটি রঙিন বেলুনের পাশাপাশি সরকারি জন্মনিয়ন্ত্রণ উপকরণ (কনডম) ব্যবহার করা হয়।

সৌন্দর্য বৃদ্ধির নামে হাসপাতালের এমন কাণ্ডের ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এসব দেখে সাধারণ মানুষ, ছাত্রসমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।

তাদের দাবি, যে বিজয় অর্জনের জন্য দেশের ৩০ লাখ নাগরিক শহীদ হয়েছেন, মা-বোনেরা নিজেদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন, সেই বিজয়ের দিন পালন করতে গিয়ে কনডম ব্যবহার করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

শরীয়তপুর ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাইফ রুদাদ বলেন, ‘যারা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করে, তারাই বিজয় দিবসকে অসম্মানিত করতে এ অপকর্ম ঘটিয়েছে। অবিলম্বে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও ব্রাদার রেজাউলকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

শরীয়তপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ-সভাপতি সাংবাদিক শহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিজয় দিবসের সাজসজ্জায় যারা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন, তাদের বিচারের দাবি জানাই।’

এদিকে এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা ও অভিযোগের মধ্যে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ব্রাদার ইনচার্জ রেজাউলকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ব্রাদার ইনচার্জ রেজাউলকে ফোন করলেও তার মতামত জানা যায়নি।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পরপরই সাজসজ্জা ছিঁড়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি। বিষয়টি দুঃখজনক। রেজাউলের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। তিনি বিএনপি-জামায়াতের কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন কি না, সেটি তদন্ত করা হবে।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. সোবাহান বলেন, ‘এ ঘটনায় ব্রাদার রেজাউলকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না, সে ব্যাপারে তদন্ত হবে।’

আইকে