আসামিরা আদালতে

আজ ভয়াবহ বর্বরোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের দুটি মামলার রায় হতে যাচ্ছে। রায় উপলক্ষে আসামিদের আদালতে আনা হয়েছে।
বুধবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আসামিদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আনা হয়। তাদের নাজিমউদ্দিন রোডের অস্থায়ী আদালতের নিকটবর্তী পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে বিডিআর বিচারের জন্য তৈরি করা আদালতে রাখা হয়েছে।
পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করবেন।
ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হুজি নেতা মুফতি হান্নান, সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুরুজ্জামান বাবরসহ ৫২ জনকে আসামি করা হয়। দীর্ঘ বিচারকাজ শেষে বুধবার ওই ঘটনায় দায়ের করা দুই মামলার রায় ঘোষণা হবে।
তবে মামলা বিচারকালীন জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় এবং হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ৪৯ জন।
আসামিদের মধ্যে ৩১ জন কারাগারে আছেন। তারা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ, মুফতি হান্নানের ভাই মুহিবুল্লাহ মফিজুর রহমান ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাইদ ওরফে ডাক্তার জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলুবুল, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, শাহাদত উল্যাহ ওরফে জুয়েল, হোসাইন আহমেদ তামিম, মইনুদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, আরিফ হাসান সুমন, মো রফিকুল ইসলাম সবুজ, মোঃ উজ্জল ওরফে রতন, হরকাতুল জিহাদ নেতা আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মাদ ওরফে জিএম, শেখ আব্দুস সালাম, কাশ্মিরী নাগরিক আব্দুল মাজেদ ভাট, আব্দুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে পীর সাহেব, মাওলানা শাওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এর সাবেক মহাপরিচালক আবদুর রহিম, রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে ছিলেন। মামলার যুক্তিতর্কের শেষদিন তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ মামলায় পলাতক আছেন ১৮ আসামি। তারা হলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বর্তমান বিএনপির এমপি কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদ, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুনছালিন, মো. খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মোঃ ইকবাল, লিটন ওরফে মাও. লিটন, সবেক ডিসি পূর্ব মো. ওবায়দুর রহমান, সবেক ডিসি দক্ষিণ খান সাইদ হাসান, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার, মেজর (অব.) এটিএম আমিন, হানিফ এন্টার প্রাইজের মালিক মো. হানিফ, শফিকুর রহমান, আব্দুল হাই ও বাবু ওরফে বাতুল বাবু।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় মূলত টার্গেট ছিল আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ওই হামলায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও, গুরুতর আহত হন তিনি।
এছাড়া এই হামলায় মহিলাবিষয়ক সভানেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারান। এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে আহত হন শত শত নেতাকর্মী, অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
এসএমএন