ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


বাঘায় কালবৈশাখী’র তান্ডব, ঝরে গেছে ২৫ কোটি টাকার আম


২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৫৫

ছবি-নতুনসময়

আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাত রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা উপজেলায় এ বছর আমের উৎপাদন এমনিতে কম। তার উপর বুধবার রাতে কালবৈশাখীর তান্ডবে এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকারি ফসল আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে যারা বাগান চুক্তি অগ্রীম আম ক্রয় করেছেন তাঁরা এই মুহুর্তে চরম হতাশা এবং উৎকন্ঠায় রয়েছেন ।

উপজেলা কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য মতে,বাঘায় ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। তবে এ বছর বাগানে আম কম থকায় উৎপাদন ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি ৬ থেকে ৭ মেট্রিক টন। এ দিক থেকে বুধবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে কালবৈশাখী তান্ডবে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ দাবি করছেন, বিভিন্ন বাগানে ১ শতাংশের বেশি আম ঝড়ে গেছে। আর আম চাষিরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন কমপক্ষে ৫ শতাংশের বেশি আম ঝরে গেছে। এ থেকে ধারনা করা হচ্ছে, বাঘা উপজেলায় প্রায় ২৫ কোটি টাকার আম ঝরে গেছে। অনুরুপ ক্ষতি হয়েছে পার্শ্ববর্তী চারঘাট উপজেলায়।

এ অঞ্চলের আম চাষীদের মতে, রাজশাহীকে আমের জন্য বিক্ষাত বলা হলেও আম প্রধান অঞ্চল মূলত জেলার চারঘাট-বাঘা ও চাপাইনবাবগঞ্জকে ঘিরে। এখানে খাদ্য শস্যের পাশা-পাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে আমই প্রধান।এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাঘার আমের সু-খ্যাতি সবচেয়ে বেশি বলে জানান আম ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, বিগত দুই বছর কতিপয় অসাধু ব্যাবসায়ীদের কারণে সরকারি ভাবে সময় বেধে আম পাড়া শুরু এবং বাজার মুল্য ভাল না পাওয়ায় আমের সাথে সম্পৃক্তরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন। এ দিক থেকে যদি এ বছরও বাজার মূল্য ভাল না হয়-তাহলে আবারও আম চাষীদের মাথায় হাত পড়বে।

বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম এলাকার আম ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান বলেন, এবার লিজ নিয়ে আমের চাষ করেছি। ঝড়ে বাগানে যে পরিমান আম পড়েছে তার ক্ষতি অপুরনীয় । এ ঝড় না হলে সঠিক সময়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বিক্রি হতো। তবে আমার বাগানে গড়ে প্রায় ৫ শতাংশের মতো আম ঝড়ে গেছে। অনুরুপ কথা বলেন আমোদপুর গ্রামের বাগান মালিক আব্দুর রাজ্জাক । তাঁর মতে, অত্র উপজেলার কৃষকরা শুধু আম বিক্রি করে প্রতি বছর অর্থ উপারজন করেন ৬ থেকে ৭ শ কোটি টাকা।

প্রবাদ আছে ‘আমের আনা, মাছের পাই’ অর্থ্যাৎ আম যে পরিমাণ গাছে আসে শেষ পর্যন্ত তার এক আনা থাকলেই ব্যবসায়ীদের লাভ। বাকি ১৫ আনা ঝরে গেলেও কিছু আসে-যায় না। এখন এই প্রবাদকে লালন করে প্রতিদিন নিরলস ভাবে আম পরিচর্যা করছেন আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এ বছর যে পরিমান মুকুল এসেছিল সে পরিমান আমা হয়নি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জনি জানান, আমের জন্য অল্টারনেটিক ডিয়ার (বছর) ভ্যারি করে। অর্থাৎ এক বছর ভাল আম হলে অন্য বছর এমনি কম হয়। এ দিক থেকে পরপর দুই বছর দেশে প্রচুর পরিমান আম উৎপাদন হওয়ায় এবার আম কম হয়েছে। তিনি বলেন, এবার উৎপাদন কম হওয়ায় দাম ভাল পাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এ থেকে আগামিতে প্রাকৃতিব দূর্যোগ না হলে এই ঝড়ের ক্ষতি অনেকটা পুসে যাবে।