অবশেষে বউ পাচ্ছে চিংড়ি মাছের জন্য বিয়ে ভেঙে দেওয়া সেই বর

চিংড়ি মাছ না দেয়ায় বিয়ে ভেঙে দেওয়া সেই যুবক অবশেষে বউ পাচ্ছে। তবে, এ জন্য তাকে কাবিনের তিন লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করতে হবে। আগামী শুক্রবার (৫ অক্টোবর) নতুন বউকে ঘরে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বরপক্ষ।
এছাড়া এর আগে চিংড়ি মাছকে ঘিরে ঘটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য শ্বশুরের উপস্থিতিতে মুরুব্বিদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সেই চিংড়ি জামাই। এ খবর নিশ্চিত করেছেন আনোয়ারার বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ওই কনে ও বর পক্ষকে নিয়ে চলে এক সালিশি বৈঠক। প্রায় ৩ ঘন্টার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কনের কাবিননামার মোহরানার (দেনমোহর) বাইরে বিয়ে অনুষ্ঠানে বিবাদের জন্য কনের নিরাপত্তা হিসেবে আরও ৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত গুনতে হবে বর আলমগীরকে। এই টাকা নগদ প্রদান করেই আগামী শুক্রবার কনেকে ঘরে নিয়ে যাবেন তিনি।
এছাড়া আগের কাবিননামা অনুযায়ী ৭ লাখ টাকা দেনমোহর ও স্বর্ণালংকার বাবদ ৮০ হাজার টাকা উসুলের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান চৌধুরী জানান, ছেলে ও মেয়ে একই উপজেলার দু’টি আলাদা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের উপস্থিতে মিলিয়ে দেয়া হয়েছে। মান্নান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বরুমছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় উপজেলার বটতলী বাজারের আলভী ম্যারেজ গার্ডেনে বিবাহ অনুষ্ঠানে বরকে চিংড়ি মাছ না দেওয়ায় বর ক্ষিপ্ত হয়ে টেবিল উল্টে দেয়। এ সময় কনে পক্ষের লোক শান্ত হতে বললে বর আরও খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষে তুমুল কথা কাটাকাটি হয়, বর বিবাহ বিচ্ছেদ করে দেয়। বর ও তার আত্মীয়স্বজন পালিয়ে চলে যেতে চাইলে কনের পক্ষ তাদেরকে আটকে রাখে।
পরে আনোয়ারা থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষকে নিয়ে পুলিশ সমঝোতায় আনতে চাইলে কনের বাবা বরকে মেয়ে তুলে দিতে আপত্তি জানায়। আর দুই পক্ষে মিলামিল হয়নি। এ সময় পুলিশ তিন চারদিনের মধ্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার নিয়ে দুই পক্ষকে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে মিমাংসা করতে বলেন।
এ বিষয়ে কনের বাবা বলেন, সামান্য চিংড়ি মাছের জন্য যে ছেলে বিয়ের আসরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, সে ভবিষ্যতে আমার মেয়েকে অত্যাচার করবেনা গ্যারান্টি কি?
পরে শুক্রবার কনের বাবার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গ্রামে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে একটা মিমাংশা আনতে চেষ্টা করছি।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মাহমুব মিল্কী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বরের একগুঁয়েমির কারণে বিয়েটি ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে তা সামাজিকভাবে মিমাংসা করে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।