ঢাকা সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


রাণীনগরে শিশু পার্ক ব্যবসায়ীদের দখলে


১ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৩৩

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা কাম্পাসে অবস্থিত একমাত্র শিশুপার্ক বেশ কিছু দিন ধরে স্যানিটেশন রিংপাট ব্যবসায়ীদের দখলে রয়েছে।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছেলে-মেয়েরা ও বাহির থেকে আসা কমলমতি শিশু-কিশোররা খেলাসহ নানা বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলা পরিষদ কাম্পাসে যে সকল পরিবার কর্মস্থলের কারণে বসবাস করে তারা বলছে, আমাদের সন্তানদের খেলা ও বিনোদন নিয়ে অনেক সমস্যায় আছি। পার্কটি বেদখল হওয়ার কারণে বাচ্চাদেরকে এক রকম বদ্ধ ঘরে রাখতে হয়।

জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ প্রবর্তনের সাথে পর্যায়ক্রমে সারা দেশের মত ১৯৮৬ সালে রাণীনগর উপজেলা সদরে বালুভরা মৌজায় ১১.৬৮ একর জমির উপর প্রশাসনিক দপ্তর, আবাসিক ভবন, মসজিদ ও শিশুদের চিত্রবিনোদনের জন্য পার্ক সহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। সময়ের বিবর্তনে ভবন গুলো কয়েক দফা সংস্কার মেরামত ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হলেও শিশু পার্কটির উপরে উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের তিন দশক ধরে কোন সু-নজর না পড়ায় প্রকল্প আসে প্রকল্প যায় এনিয়ে যেন কারও মাথা ব্যথা নেই।

দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলা অযন্তে পড়ে থাকায় শিশুদের চিত্রবিনোদনের একমাত্র পার্কটি দিন দিন তার সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। তার উপর আবার মরার খাড়া হিসেবে দাঁড়িয়েছে রিংপাট ব্যবসায়ীদের দখলদ্বারি। ফলে উম্মুক্ত বিনোদন থেকে এখানকার শিশুরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রয়েছে। ইতিমধ্যেই শিশুদের যতটুকু খেলনা সামগ্রী পার্কে ছিল তার মধ্যে থেকে আবার রাতের অন্ধকারে স্লিপারসহ বেশকিছু খেলার সামগ্রী চুরি হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মাঝে মধ্যেই এখানে মাদক সেবীদের আনা-গুনাসহ পথচারিদের প্রসাব-পায়খানা করতে দেখা যায়। এ যেন দেখার কেউ নেই। অথচ পার্কের পাশে অবস্থিত অফিসার্স ক্লাবটি সব সময় ঝকঝকে তকতকে থাকলেও পার্কটি সৌন্দর্য বর্ধণে উপজেলা প্রশাসনের কোন নজরদ্বারি নেই। পার্কটি যেন দিন দিন সুষ্ঠ নজরদারীর অভাবে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ছে। খেলার জায়গা শিশুরা না পাওয়ায় বিশেষ করে কাম্পাসে অবস্থানরত প্রায় ১৪টি পরিবারসহ আশ-পাশের ছেলে-মেয়েরা ঘরে বসেই গেম খেলার জন্য কম্পিউটারমুখী হয়ে পড়ছে। অনেক অফিসার কিছুটা বাধ্য হয়েই পড়া-লেখা, খেলা-ধূলার মানসম্পূর্ণ পরিবেশের জন্য জেলা সদর নওগাঁতে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছে।

এ ব্যাপারে স্যানিটেশন রিংপাট তৈরির সাথে জড়িত আত্রাই উপজেলা থেকে আসা ইয়ারুল ইসলাম জানান, আমরা স্যারের নির্দেশে এই পার্কের মধ্যে রিংপাট তৈরি করছি। কোন স্যারের অনুমতিতে কাজ করছে তা জানতে চাইলে, নাম বলতেও তিনি নারাজ!

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ জানান, এমনিতেই উপজেলা কাম্পাসে শিশুদের খেলা-ধুলার জায়গা নেই। যে পার্কটি আছে সেখানে আবার রিংপাট তৈরি হচ্ছে। এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করবো।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনিয়া বিনতে তাবিবের সাথে মোবাইল ফেনে কথা বললে তিনি রিংপাট তৈরির বিষয় স্বীকার করে বলেন, এটা পরিষদের পরিত্যাক্ত একটা জায়গা। এখানে কেউ হয়তো শখ করে দু’একটা স্থাপনা তৈরি করেছিলো। তবে এটি ওপেন শিশুপার্ক না। আর পরিষদের জায়গায় কোন শিশুপার্ক হয় না।

একেএ