ঢাকা সোমবার, ২১শে এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ ১৪৩২


সেই প্রধান শিক্ষক আবারো বরখাস্ত


২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:১৮

বিদ্যালয়ের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডসহ একাধিক অভিযোগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপরাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দীনকে অবশেষে আবারো সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 
 
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল হক বিশ্বাস রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
 
ম্যানেজিং কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে বিদ্যালয়ের সাড়ে সাত লাখ টাকা আত্মসাতসহ নানা অভিযোগে ইতিপূর্বে ম্যানেজিং কমিটির সভায় প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীনকে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
 
কিন্তু তিনি ম্যানেজিং কমিটির নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গায়ের জোরে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যার কারণে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি তাকে তিন বার কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে। কিন্তু কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
 
শোকজে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশ না থাকা সত্বেও গত ০৩.০৭.২০১৮ তারিখে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ক ও খ শাখার ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে ৪২ হাজার ৫৬০ টাকা বিদ্যালয়ের নোটিশের মাধ্যমে সংগ্রহ করেন। কিন্তু উক্ত টাকার হিসাব বিদ্যালয়ের নগদান বহিতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। 
 
এছাড়া ২০১৩-১৪ সালের এসএসসি’র আয় ব্যয়ের হিসেবে ৪৬ হাজার ৯৬০ টাকার গড়মিল পাওয়া যায়। 
 
এছাড়া ১১.১১.২০০৮ তারিখের পৃষ্ঠা নং ৯০, রেজুলেশন নং ০৮/০৮ উল্লেখ করা হয়েছে, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ রেজুলেশন অনুযায়ি সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পাবেন আয়ুব হোসেন। কিন্তু শীর্ষ ২ জনকে অতিক্রম করে তৃতীয় জনকে দিয়ে নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
 
নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন উপলক্ষ্যে ০৩/১২ এর রেজুলেশনে সভাপতি রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর ভুয়া পাওয়া যায়। যা কমিটির নিকট সন্দেহাতীত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
 
প্রধান শিক্ষককে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া সত্ত্বেও সীল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে উপজেলা চেয়ারম্যানের নিকট এক ছাত্রের বৃত্তির জন্য নাম প্রেরণ করেন শিক্ষক আলাউদ্দীন।
 
এছাড়া প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীন ১৪/১১/২০১৭, ১৫/১১/২০১৭ ও ২০/১১/২০১৭ তারিখে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের তহবিল থেকে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ করেছেন। যা কমিটির কাছে বৈধ বলে প্রতীয়মান হয়নি। ভুয়া রেজিস্ট্রেশন ভাউচার দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে ৫ হাজার ২৩ টাকা সোনালী ব্যাংক মোবারকগঞ্জ শাখায় জমা দেখালে বাস্তবে তা ব্যাংকে জমা দেয়া হয়নি। এছাড়া সভাপতির বিনা অনুমতিতে গত ৩১/০৫/২০১৮ তারিখে খুলনায় এইচটিটিআই প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়াসহ তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
 
বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির তৎকালীন সভাপতি ডাঃ রেজাউল ইসলাম ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন।
 
প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দীন বলেন, আমি এখনো বরখাস্তের চিঠিপত্র কিছুই পায়নি। তাছাড়া যে জাল সার্টিফিকেটে চাকুরী করছে তার কিছু হচ্ছে না। অথচ কমিটি আমার সাথে অন্যায় আচরণ করছে।
 
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দীনের সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল হক বিশ্বাস বলেন, নানাবিধ দুর্নীতি ও অনিয়ম ম্যানেজিং কমিটির সভায় প্রতীয়মান হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
 
একেএ