ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


ডুমুরিয়ায় ২৬ ও ২৮ ব্রি ধান কাটার আগ মুহূর্তে ছত্রাকজাতীয় ব্লাস্ট রোগ


৮ এপ্রিল ২০২১ ২১:০৯

ছবি- সংগৃহিত

ডুমুরিয়া উপজেলায় ধান কাটার আগ মুহূর্তে কৃষকদের রোপনকৃত ফসলি জমিতে ছত্রাকজাতীয় ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ছে ।

২৬ ও ২৮ ব্রি ধানে এ রোগে সংক্রমণের সংখ্যা বেশী। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এ ধান আবাদ করা কৃষকরা। তবে এ রোগের সংক্রমণ রোধে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি অফিস। ইতিমধ্যেই কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তার ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্লাস্ট রোগে ধানের শীষের নিচে কালো দাগ দেখা দেয় ও শীষ দ্রুত মরে যায়। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে মোট ২১ হাজার ৬শত ৬০ একর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যো অল্প সংখ্যক জমিতে ২৬ ও ২৮ জাতের ব্রি ধান চাষ করেছেন কৃষকেরা। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী এক দুই সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার কথা। কিন্তু উপজেলার মাঁদারতলা, বয়ারসিং, চ্যাংমারী, কুলবাড়িয়া সহ উপজেলার জমিতে দেখা দিয়েছে এ রোগ। তবে বাস্তবে এর সংখ্যা বেশী রয়েছে বলছেন কৃষকরা।


সরেজমিনে দেখা যায়, ধানক্ষেত জুড়ে ব্লাস্ট রোগের ওষুধ ছিটিয়ে দিচ্ছেন কৃষকেরা। পাকা ধানের শীষের নিচে কালো দাগ।

ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক জানান, প্রথমে আক্রান্ত ক্ষেতে কয়েকটি ধানের শীষের নিচে কালো দাগ দেখা যায়। এরপর দ্রুত সমগ্র ক্ষেতে তা ছড়িয়ে পড়ে। অল্প সময়ের মধ্যেই ধানের শীষ মরে যায়।


শোভনা ইউনিয়নের মাঁদারতলা গ্রামের কৃষক প্রকাশ মন্ডল বলেন, আমার জমিতে প্রায় দেড় একর জমিতে ২৮ ব্রি আবাদ করেছিলাম। ফলন এবার ভালো ছিলো কিন্তু ছত্রাক জাতীয় ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে না পড়লে প্রতি একরে ৭০থেকে ৮০ মণ ধান পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু হঠাৎ এই রোগ দেখা দেওয়ায় একরে ৪৫থেকে ৫০ মণ ধান পাওয়ার সম্ভবনা আছে।

তারপরও কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে আমি কীটনাশক স্প্রে করছি। আমরা বর্তমানে আতঙ্কে রয়েছি। আমাদের বাকি ফসলগুলো যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আমাদের খাবার সংকট দেখা দিবে।

অচিন্ত্য মন্ডল বলেন, যারা দেশি জাতের ২৬ ও ২৮ ব্রি ধান চাষ করেছেন, তাদের সবার ক্ষেতেই ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। অনেক ক্ষেতের ধান ইতিমধ্যে মরে গেছে। অনেক কৃষক এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে এ রোগের আক্রমণ দমনের জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠে কাজ করছেন। আমরা ইতিমধ্যেই সবার ছুটি বাতিল করেছি। কৃষকদের ফসলি জমিতে ছত্রাকনাশক ঔষধ স্প্রে করার পরামর্শ ও তা বাস্তবায়নের আমি মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। দিনে অতিরিক্ত গরম ও শেষ রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ার তারতম্যের ফলে এ রোগ দেখা দেয়। এতে আতঙ্কিত না হয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক ছিটানো হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।