ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


নিরামিষ ভোজী হাঙ্গর!


১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:২৮

হঠাৎ স্বভাবেব পরিবর্তন হলে যে কেউ অবাক হতে পারে। একজন রক্তক্ষয়ী হিংস্র শ্বাপদ। রাতারাতি করেই যদি হিংস্রতা ছেড়ে দিয়ে নিরামিষ ভোজী হয়ে যায় তবে শুনতেই একটা চিন্তার রেখা কপালে এস দাঁড়ায়। মনে হয়, কিছু একটা সমস্যা ওর? সে কি সন্ন্যাস নিলো? নাকি অন্য কোনো ঝামেলায় পড়েছে।

বিশ্বাস করা কঠিন হলেও বিজ্ঞানীরা এমন এক হাঙ্গরের খোঁজ পেয়েছে যার নাকি মাংসে দারুণ অরুচি! এই হাঙ্গরের প্রিয় খাবার শাক লতা পাতা, কী বিচিত্র কথা!

বিচিত্র কথার এই শেষ নয়। এই হাঙ্গর নাকি সারা জীবনই আমেরিকার উপকূল জুড়ে মহড়া দিয়ে বেড়াতো। সম্প্রীতি, বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, আরে.. এরা তো স্বেচ্ছায় নিরামিষ খায়!

এই হাঙ্গরের নাম হচ্ছে বনেটহেডেড হাঙ্গর। যেমন নাম তেমন চেহারা। একদম যেন গাড়ির বনেট। এরা দলবেধে বাস করে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে আটলান্টিকের পশ্চিম উপকূলে।

এই সব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে কাঁকড়া, চিংড়ি, শামুক আর কাঁটাওয়ালা মাছ পাওয়া যায়। এই ছোটখাটো আমিষ খেয়েই দারুণ খুশিতে জীবন পার করে দেয় এসব হাঙ্গরগুলো। কতই বা বড় আকারে? স্ত্রী হাঙ্গরগুলো একটু বড়সড় হয় সেগুলো পাঁচ ফুট পর্যন্ত বড় হতে পারে। ফলে ছোটরা যে কত ছোট বোঝাই যাচ্ছে।

এই ছোট্ট-খাট্টো হাঙ্গরগুলো নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এবং ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সায়েন্টিস্টরা নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে বেশ খুশি মনে সামুদ্রিক উদ্ভিদ খেয়ে থাকে এরা।

গবেষকরা প্রথম দিকে ধারণা করছিলেন হাঙ্গরদের এভাবে শাক সবজি খাওয়া একটা কাকতালীয় ঘটনা, এটার সঙ্গে তাদের শরীরে পুষ্টির কোনো সর্ম্পক নেই। কারণ তিনি, প্রাণী যা খায় তার সবটাই তার হজম হওয়ার বা পুষ্টিতে যোগ হয় না।

এরপর তারা কিছু সামুদ্রিক আগাছা এনে গবেষণাগারে চাষ করেছেন এবং কিছু বনেটহেডেড হাঙ্গরকেও ৩ সপ্তাহ আগাছাগুলো খাইয়েই রেখেছেন। মজার বিষয় হচ্ছে তারা সত্যি এগুলো খেয়ে বড় হয়েছে। তাদের ওজনও বেড়েছে।

এইসব দেখে এখন তো মানতেই হয় এই হাঙ্গর নিরামিষ ভোজী। সব হাঙ্গর ভয়ঙ্কর নয় কিন্তু।

এনএমএন