ঢাকা শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


আ. লীগের ৭০ বিএনপির ৬০


১৪ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৪১

ফাইল ফটো

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দল ও মহাজোটের শরিকদের জন্য ৭০টি আসন ছাড়বে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। অপর দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের শরিকদের জন্য সর্বোচ্চ ৬০ আসনে ছাড় দিতে চায় রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। তবে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনো প্রধান এই দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দরকষাকষি চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের শরিক দলগুলো।

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যেসব নেতা নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয় তেমন প্রার্থী ছাড়া কাউকেই ১৪ দল কিংবা মহাজোটের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এসব প্রার্থী বাছাইয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নানামুখী আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রথমেই প্রাধান্য পাচ্ছে ১৪ দলভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো। ১৪ দলের মধ্যে ৬টি আসনে ওয়ার্কার্স পার্টি এবং ৫টি আসনে জাসদের প্রার্থীরা মনোনয়ন পাবেন। এ ছাড়া আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি-জেপি এবং সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর নেতৃত্বাধীন তরীকত ফেডারেশন দুটি করে আসনে মহাজোটের মনোনয়ন পাবে। দিলীপ বড়ূয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী দল, ব্যারিস্টার আরশ আলীর নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রী পার্টি এবং ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খানের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট কেন্দ্রও কয়েকটি আসনে ১৪ দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছে। আওয়ামী লীগের কাছে জাতীয় পার্টির দাবি ৭৬টি আসন। তবে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেলে ২২ থেকে ২৭টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হতে পারবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শরিকদের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সর্বশেষ বৈঠকে আলোচনা হয়। এছাড়া ৩০০ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন জরিপ প্রতিবেদন নিয়েও আলোচনা করেন বৈঠকে উপস্থি নেতারা। তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সংসদীয় বোর্ডের সদস্য ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ জানান, ১৪ দলীয় জোট কিংবা মহাজোটগত প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার পর এ নিয়ে ১৪ দল ও মহাজোট নেতাদের আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে।

এ দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্য শরিকদের সঙ্গে খুব একটা দরকষাকষি করতে হবে না বলে মনে করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। শরিকদের জন্য সর্বোচ্চ ৬০ আসনে ছাড় দিতে চায় দলটি। তবে জোটের যেসব দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হবে না, সরকারে গেলে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন দায়িত্বে বসানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে । তবে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বলছেন, বিএনপির কাছে তারা ৬০ আসনে ছাড় চাইবেন। তবে কোনোভাবেই ৪৫টির কম আসনে রাজি হবে না তারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে এ ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। দু-একদিনের মধ্যেই এই তালিকা জোটের প্রধান শরিক দল বিএনপির হাতে তুলে দেওয়া হবে। তার পরই আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত করতে বৈঠক হবে। পাশাপাশি ২০-দলীয় জোটের সঙ্গেও আসন বণ্টন নিয়ে বসবে বিএনপি। যে যেমন তালিকাই দিক, জামায়াতকে বিএনপি ২৫টির বেশি আসন দেবে না। লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে (এলডিপি) ৫ আসন দেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিব রহমান পার্থ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রয়াত শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে তাসমিয়া প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মুহাম্মদ ইবরাহিম, পিপলস পার্টির রীতা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মণ্ডল ছাড়াও ২০-দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিশ, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের কয়েক নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
নিবন্ধিত দলগুলোর বাইরে এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) দু-একজন নেতাকে সুযোগ হলে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে। ২০-দলীয় জোটের বাকি দলগুলোকে সরকারে গেলে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, আমরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি। এ লক্ষ্যে বিরোধী সব রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সবার লক্ষ্য যেখানে সুনির্দিষ্ট, সেখানে আসন কোনো বড় সমস্যা নয়।