ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


লন্ডনে পায়ের মাটি সরে যাচ্ছে তারেকের!


১৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:২৩

রাজনৈতিক আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে সাতটি তথ্য দিয়েছেন তার পাঁচটিই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ভুল তথ্য দেওয়া অভিযোগে বাংলাদেশ সরকার তার ‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ বাতিল করে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর পাল্টা আবেদন করেছে।

এই আবেদন শুনানির জন্য লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাস আগামী দু-একদিনের মধ্যে একজন আইনজীবীও নিয়োগ দেবে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারেকের রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ সম্পর্কিত কাগজপত্র হাতে পেয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে তিনি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের শর্ত হিসেবে সাতটি তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো হলো:

১. তারেক জিয়া একটি রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা। তার এবং তার দলের বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে।

২. তারেক রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। দেশে অবস্থান করলে তার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।

৩. ন্যায় বিচারের সব পথ তার জন্য রুদ্ধ হয়ে গেছে। দেশের কোনো আদালতেই তার ন্যায় বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

৪. তারেক জিয়া কখনোই কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতার সঙ্গে জড়িত নন এবং সন্ত্রাসী কোনো সংগঠনের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

৫. কোনোরকম হত্যাকাণ্ডের বা রাজনৈতিক সহিংসতার সঙ্গে তারেকের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

৬. জঙ্গিবাদ বা কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তার কোন সংশ্রব নেই। তিনি জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী নন।

৭.তারেক জিয়া অগণতান্ত্রিক কোনো পন্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের বিশ্বাসী নন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তারেক ব্রিটিশ দূতাবাসে যে সাতটি শর্ত দিয়েছেন, তা পর্যালোচনা করে দেখেছেন এর ৫টি অসত্য। এখন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের পর এর পক্ষে বাংলাদেশ সরকারের কাছে দালিলিক প্রমাণ রয়েছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ২ থেকে ৬ নম্বর তথ্যগুলো অসত্য। যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে লেখা চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘তারেকের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখানো হয়নি। তার দল বাংলাদেশে অবাধে রাজনীতি করছে।’

‘ন্যায় বিচারের সব পথ রুদ্- এই তথ্যটিও অসত্য বলে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়টি বলেছে, ‘যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেই রাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিচার করছে।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ই প্রমাণ করে তারেকের দেওয়া ৪, ৫ ও ৬ নম্বর তথ্য অসত্য। ঐ রায়ে তারেক সন্ত্রাসী হিসেবে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হয়েছেন। তার পরিকল্পনা ও নির্দেশে ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। আর ঐ হত্যাকাণ্ড সংগঠনে তারেককে সহযোগিতা করেছে অন্তত দু’টি জঙ্গি সংগঠন। বাংলাদেশ সরকার মনে করছেন, মিথ্যা তথ্য প্রদান প্রমাণিত হলেই তারেকের রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল হবে।

এমএ