ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

সবই বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে, তবুও প্রকাশ করছি


৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবই বঙ্গবন্ধুর বিপক্ষে, তবুও প্রকাশ করছি কারণ মানুষ যেনো সত্যকে আবিষ্কার করতে পারে। সবই ওনার বিপক্ষে জেনেও আমি প্রকাশনায় নিয়ে এসেছি এই কারণে যে এর ভিতর থেকে বাংলাদেশের জনগণ সত্যটা জানতে পারবে, সত্যকে আবিষ্কার করতে পারবে। বাংলাদেশের ইতিহাসকে জানতে পারবে।

শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবন প্রাঙ্গণে বইটির প্রকাশনা উৎসবে শুরুতে প্রথম খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ৪৬টি ফাইল, ৪০ হাজারের মতো পাতা। সেগুলোকে বসে এডিট করে করে এর যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ আজ আমরা তা প্রকাশ করতে পেরেছি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের রিপোর্ট সবই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে, এই বিরুদ্ধে রিপোর্ট তারপরও আমরা কেন প্রকাশ করলাম এটা অনেকের মনে আসতে পারে। পৃথিবীতে কোথাও কোনো দেশে কেউ কখনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে রিপোর্ট হলে সেটা প্রকাশ করেছে কিনা। আমার মনে হয় আজ পর্যন্ত কেউ করেনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমার আগ্রহ এই কারণে যে এই রিপোর্টের মধ্যে ১৯৪৮ সাল থেকে ৭১ সাল পর্যন্ত জাতির পিতার প্রতিটি কর্মকাণ্ড, গতিবিধি, কোথায় গিয়েছেন, কোন মিটিং করেছেন, কোথায় কি বলেছেন তার অনেক তথ্য সেখানে রয়েছে। যে সব চিঠি জাতির পিতার কাছে গেছে তার অধিকাংশ বাজেয়াপ্ত করা ছিল। অনেক চিঠি তিনি সেগুলো প্রাপকের কাছে কোনোদিন পৌঁছায়ইনি। কিন্তু সেই চিঠি-পত্রগুলোও পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের বহু নেতা-কর্মীর নাম এখানে পাওয়া যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সত্যকে কখনো চাপা দেওয়া যায় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, এমনকি ভাষা আন্দোলন নিয়ে এমন কথা বলা হয়েছে যে ভাষা আন্দোলন নিয়ে – উনি তো জেলে ছিলেন ভাষা আন্দোলন কি করলেন। এই যে মানুষের একটি বৈরী চিন্তা-ভাবনা আমি আশা করি এই ডকুমেন্টগুলো পেলে পরে সত্যটা জানতে পারে।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য ও বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুর পেছনে সব সময় পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার লেগে থাকার কারণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রতিটি জায়গায় বৈষম্য, বাংলাদেশের মানুষের বঞ্চনার কথা তুলে ধরতেন। যে আমরা সংখ্যায় বেশি অথচ আমরা সব জায়গা থেকে বঞ্চিত। বঞ্চনার বিরুদ্ধে তিনি লড়াই সংগ্রাম করেছেন, সোচ্চার হয়েছেন। আর এ কারণেই মনে হয় যে তার প্রতি একটি বৈরী মনোভাব ছিল। তার ফলাফলটা ছিল এই তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থা সব সময় সক্রিয়।

‘তার প্রতিটি কাজের রিপোর্ট তৈরি করতো পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ, আর এই রিপোর্ট তারা পাঠাতো। এই রিপোর্টের ওপর তার বিরুদ্ধে মামলা, কারাগারে বন্দী করা হতো।’

বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ধাপে ধাপে তিনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যান। এর পরিণতি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা। এই আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে তাকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে, অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো কিছুতেই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কখনো মাথানত করেননি।’

অনুষ্ঠানের বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এমএ