ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


দেশ ছেড়ে বিদেশে কেন তারকারা?


১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫১

নব্বই দশককে বলা হয় ছোটপর্দার সোনালি যুগ। চ্যানেল ছিল একটাই। তা হলো সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি। এই বিটিভিকে ঘিরেই জীবিকা চলত হাজার হাজার তারকার। সেসময়ে ব্যস্ত ছিলেন আফজাল হোসেন, হুমায়ূন ফরীদি, সুবর্ণা মুস্তাফা, খালেদ খান, তারিক আনাম খান, আব্দুল কাদের, জাহিদ হাসান, শমী কায়সার, বিপাশা হায়াত, তৌকীর আহমেদ, বিজরি বরকতউল্ল্যাহ, আজিজুল হাকিমরা। তেমনি ব্যস্ত ছিলেন সেই সময়ের নতুন মুখ মীর সাব্বির, লিটু আনাম, টনি ডায়েস, দীপা খন্দকার, তারিন, সুইটি, মাহফুজ আহমেদের মতো তারকারা।

ব্যস্ততায় কাটত নির্মাতা ও চিত্রনাট্যকারদের সময়। তারকাবহুল অনুষ্ঠানগুলো দর্শকদের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম ছিল। হুমায়ূন আহমেদের মতো নির্মাতাদের নাটকগুলোতে দেখা যেত তারকাদের ছড়াছড়ি। ধারাবাহিক নাটকে দেখা যেত তখনকার নামিদামি তারকাদের।

বর্তমান তারকার মধ্যে রয়েছেন মোনালিসা, মিলা হোসাইন, তিন্নি, শিরীন বকুল, রোমানা, শায়না আমিন, নাফিজা জাহান, ঈশিকা খান, রিচি সোলাইমানদের নাম। এদের মধ্যে মোনালিসা, মিলা, রিচি, ঈশিকা মাঝে মধ্যেই দেশে আসেন। বিশেষ করে ঈদের মতো উৎসবগুলোতে দেখা মেলে তাদের। এসে নাটক-টেলিছবি ও বিজ্ঞাপনে কাজ করে আবার ফিরে যান। শোবিজের অনেকেরই কাছে তারা শীতের পাখি বলে পরিচিত।

তারা যে ক্যারিয়ারের ভাটায় বিদেশমুখী হয়েছেন তা কিন্তু নয়। অনেকেই বিয়ে করে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির ইচ্ছেতেই বিদেশের নাগরিকত্ব নিয়েছেন। সংসারি হতেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন দেশ ও প্রিয় শোবিজ থেকে।

নতুন করে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছেন তমালিকা কর্মকার। অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে সেখানেই স্থায়ী হচ্ছেন তিনি, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। তার মতোই বিদেশে স্থায়ী হতে চলেছেন আরেক অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদ।

সূত্র জানায়, অনেকদিন ধরেই এই নৃত্যশিল্পীর পরিবারের অনেক সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। এবার তিনিও যোগ দিচ্ছেন। তার সঙ্গে স্বামী নাঈমও সঙ্গী হচ্ছেন।

তবে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার চিত্র তারকাদের ক্ষেত্রে নতুন কিছু নয়। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শাবানা অনেকদিন ধরেই রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই স্থায়ী আবাস গড়েছেন স্বপরিবারে। চিত্রনায়িকা রোজিনা থাকেন যুক্তরাজ্যে। ববিতারও অনেকটা সময় কাটে কানাডাতে, একমাত্র ছেলের সঙ্গে। তারা কালেভদ্রে দেশে আসেন, আবার ফিরে যান।

সম্প্রতি ২২ বছর পর দেশ ঘুরে গেলেন কলকাতায় স্থায়ী হওয়া এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জু ঘোষ। তার মতো আরেক নায়িকা সুনেত্রাও অনেকদিন ধরে কলকাতাতেই স্থায়ী নিবাস গড়েছেন। একযুগেরও বেশি সময় যাবৎ স্থায়ীভাবে কানাডাতে বসবাস করছেন জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা আরিফুল হক। আমেরিকাতে চাকরি করেন একসময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা বিপ্লব।

অনেকদিন দেশে আসেন না চিত্রনায়িকা সোনিয়া। ক্যারিয়ারে সুবিধা না করতে পেরে যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হয়েছেন। সোনিয়া নামে ক্লোজআপ ওয়ান খ্যাত এক গায়িকাও বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন।

ক্যারিয়ারের সুবর্ণ সময়েই যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী আবাস গড়েছেন টনি ও প্রিয়া ডায়েস দম্পতি। গুঞ্জন রয়েছে, নতুন করে যেসব তারকা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চান তাদের বেশিরভাগই এই দম্পতির সাহায্য চান। অনেকে এই দম্পতির বাড়িতেই অতিথি হতে চান। তবে বিদেশ বিভুঁইয়ে চাইলেই অনেক কিছু করা যায় না। তাই এই দম্পতিকে মাঝে মধ্যেই বিব্রতকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়।

শোনা যাচ্ছে, শোবিজের একাধিক তারকা বিদেশে স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। নিজের ও আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা। এই তারকাদের তালিকায় আছেন অনেক নাটক-চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, একজন জনপ্রিয় সাংবাদিক-গীতিকারসহ সংগীতাঙ্গনেরও অনেক তারকা।

এমএ